Advertisement


পদত্যাগে প্রস্তুত

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে এবং বিভিন্ন মহল থেকে গভর্নর ড. আতিউর রহমানের পদত্যাগের দাবি উঠায় তিনি পদত্যাগে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনিএ কথা জানান। এদিকে বেলা ১১.২০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে তার কার্যালয়ে গেছেন গভর্নর আতিউর রহমান। ৩ দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফিরলেও মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে যাননি গভর্নন ড. আতিউর রহমান। তবে সোমবার দেশে ফেরার পর রাতেই অর্থমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে যাওয়ার আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে গভর্নর আতিউর জানান, দেশের স্বার্থে পদত্যাগে প্রস্তুত তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেন, আমি অপেক্ষ করছি প্রধানমন্ত্রী কী বলেন। আমি পদত্যাগ করলে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভালো হয়, দেশের ভালো হয়, তাহলে পদত্যাগ করতে আমার দ্বিধা নাই। তিনি আরো বলেন, আমি পদত্যাগপত্র লিখে বসে আছি। প্রধানমন্ত্রী বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি পদত্যাগ করব। তিনি বলেন, আমি চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভালো চলবে। কিন্তু আমি আমার বিবেক দ্বারা চালিত হই। মনে করি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তিনি না বললে আমার পদত্যাগ করা উচিৎ নয়। গভর্নর বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় আছি। আমি সাত বছর দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংককে সন্তানের মতো মনে করেছি। রিজার্ভের ২৮ বিলিয়ন ডলার থেকে অর্থ চুরি হোক- এটা আমি কখনও চাইনি। জানা গেছে, আজ বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার কার্যালয়ে গেছেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এদিকে আজ বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনায় অর্থমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার পরিবর্তে দুপুর ২.৩০টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন অর্থমন্ত্রী। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আলোচিত টাকা চুরির ঘটনাটি ঘটে ২৯ জানুয়ারি। বিষয়টি মিডিয়াতে আসে ৭ মার্চ। ৮ মার্চ এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারে ফেডারেল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আর এ ঘটনায় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো দোষত্রুটি দেখছেন না। এদিকে গত কয়েকদিনে গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে তথ্যভিত্তিক বেশ কিছু রিপোর্ট দেখে অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারক মহল নড়েচড়ে বসে। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার একরকম জেনে যায়, নজিরবিহীন এ চুরির সঙ্গে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত। যাদের পেছনে আরও প্রভাবশালী কেউ থাকতে পারেন। আর এ কারণেই টাকা চুরি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জেনেও তারা অর্থ মন্ত্রণালয় তথা সরকারের কাছে পুরো বিষয়টি গোপন রাখে। এরকম ধারণা স্পষ্ট হয়ে গেলে অর্থমন্ত্রীর ক্ষোভের বিষয়টি রোববার মিডিয়ার সামনে চলে আসে। এদিন তিনি গভর্নরকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বলেন, তথ্য গোপন করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেবেন।