Advertisement


কারাফটকে ওসি প্রদীপকে সাড়ে ৬ ঘন্টা জেরা

সৈয়দুল কাদের।।
অবশেষে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যাকান্ডের ১মাস ২দিন পরে মামলার অন্যতম আসামী সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কারাফটকে সাড়ে ৬ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ঘটনা তদন্তে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমিটির সদস্যরা। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ৪ সদস্য কারাগারে প্রবেশ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেল সুপার মোঃ মোজাম্মেল হোসেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে এসে তদন্ত টিমের প্রধান চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, নির্ধারিত সময় ৭ সেপ্টম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এতদিন মামলার অন্যতম আসামী প্রদীপের বক্তব্য নিতে না পারায় প্রতিবেদন দাখিল করা যায়নি। তিনি আরো বলেন ওসি প্রদীপের কাছে মামলা সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপুর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে মামলার অন্যান্য আসামীসহ ৬৭ জনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। সব বক্তব্য মিলিয়ে শিঘ্রই যথা সময়ে প্রদিবেন দাখিল করা হবে।

অপরদিকে পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী কক্সবাজার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে তাদের ১৬৪ ধারায় জবাবনবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন - টেকনাফের মারিশবুনিয়ার মোঃ নুরুল আমিন, মোঃ নিজাম উদ্দিন ও মোঃ আইয়াছ।

এর আগে একই আদালত দ্বিতীয় দফায় আসামিদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। প্রথম দফায় সাত দিনের রিমান্ড হয়েছিলো পুলিশের করা মাদক মামলার সাক্ষীদের।

এদিকে, টানা চারবারে ১৫ দিনের রিমান্ডেও তদন্ত কাজে সহায়ক হয় এমন তথ্য দেয় নি সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। আইন অনুযায়ী ১৫ দিনের বেশি রিমান্ড চাওয়ারও সুযোগ নেই।

তাই মঙ্গলবার প্রদীপ কুমার দাশকে চতুর্থ দফায় ১ দিনের রিমান্ড শেষে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তামান্না ফারাহ আর কোন জবানবন্দি বা রিমান্ড দেন নি। তাই তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে, বরাবরই আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
 
উলে¬খ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তিনি মারিশবুনিয়ার একটি পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফিরছিলেন।

খুনের ঘটনায় গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামি ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়।
সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ১১ আগস্ট গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব। এছাড়া হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন এপিবিএন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্সটি।

একই ঘটনায় টেকনাফ থানায় দুইটি ও রামু থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। সাক্ষী অপহরণের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় পরে আরেকটি মামলা হয়। মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৫ জন। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৩ জন। সিনহা খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮টি মামলা হয়েছে।