Advertisement


বদরখালীতে প্রার্থীরা মাঠে নামতে শুরু করেছে


স্টাফ রিপোর্টার।।
আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বদরখালীতে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। চায়ের দোকানে দোকানে বইছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বিশ্লেষণ। নড়েচড়ে বসেছে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। অনেকেই আগাম প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি কুশল বিনিময়ও করছেন অনেকেই। প্রচার-প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমানতালে চলছে।

বিশেষ করে প্রার্থীরা নির্বাচনী উত্তাপ বেশি চড়াচ্ছে চকরিয়া উপকুলীয় ইউনিয়ন বদরখালীতে। নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামীলীগের স্থানীয় পর্যায়ের পাচ নেতা এবার চেয়ারম্যান পদে নৌকার কা-ারী হতে বেশ তৎপর রয়েছেন। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের জেলা-উপজেলার সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। আবার মাঠপর্যায়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।

এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও ইতিমধ্যে নির্বাচন ঘিরে ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে প্রার্থীদের ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ এলাকার ভোটারদের মাঝে দিচ্ছেন আগাম প্রতিশ্রুতি। এছাড়াও নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে ভোটের মাঠে নিজেদের অনুকূলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অনেকেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার কা-ারি হতে চান বর্তমান চেয়ারম্যান খাইরুল বশর, বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ, মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক একে ভুট্টো সিকদার।

নৌকার মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলে দাবী করেন বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নুরে হোছাইন আরিফ। তাঁর বাবা মরহুম আবদুল হান্নান বিএ ছিলেন বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বদরখালী সমিতির সাবেক সভাপতি। নুরে হোছাইন আরিফ বলেন, গতবার দলীয় মনোনয়ন পেলেও কয়েকজন স্থানীয় নেতা দলের সিদ্বান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই কারণে আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক ভাগ হয়ে যায়। মুলত আওয়ামীলীগের কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে তিনি নৌকাকে বিজয়ী করতে পারেননি। তিনি বলেন, এবারে দলীয় মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো। কারণ বদরখালীর জনগণ এবং দলীয় নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছে।

নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী অপরপ্রার্থী মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী বাচাই করলে আমাকেই মনোনয়ন দেবে।

বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক একে ভুট্টো সিকদার। তিনিও এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে শতভাগ বিজয়ী হবো বলে দাবী করেন।

মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আনম হেফাজ সিকদার এবারও চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি গতবারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।

স্থানীয় লোকজন জানান, আগামী ইউপি নির্বাচনে একই পরিবার থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন দুই ভাই। একজন একে ভুট্টো সিকদার অপরজন আনম হেফাজ সিকদার। তারা দুইজন আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা স্বাধীনতা ও আওয়ামীলীগ বিরোধী হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। তাদের পরিবারে এই দুই নেতা ছাড়া সকলেই বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে। তবে তারা আগামী নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই চালিয়ে যাবেন।

অপরদিকে বিএনপি থেকে প্রার্থীতা হওয়ার মনোবাসনা নিয়ে ধানের শীষ প্রতীক পেতে এখন থেকেই জোরচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছেন দুইজন। অবশ্য চকরিয়া উপজেলার অন্যসব ইউনিয়নের মতো এখানেও চেয়ারম্যান পদে বিএনপি থেকে প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে একক সিদ্বান্ত দেবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপি থেকে ধানের শীষ নিতে চান সাবেক ছাত্রনেতা আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির ও বদরখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আকবর। অবশ্য সাবেক ছাত্রনেতা সাব্বির ২০১৬ সালের নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে ছিলেন। আর জাতীয় পাটি (এরশাদ) থেকে ভোটযুদ্ধে থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন বদরখালী ইউনিয়ন জাতীয় পাটির সভাপতি নাছির উদ্দিন।