Advertisement


সহায্য দেওয়ার নামে মহেশখালীতে ইউপি সদস্যদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ


রকিয়ত উল্লাহ।। মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের বিরুদ্ধে অসহায় দরিদ্র লোকদেরকে এক এনজিও সংস্থার মাধ্যমে ৬ মাস পর্যন্ত চাল ডাল, তেলসহ প্রয়োজনীয় দ্রব‍্যসামগ্রী দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ১,৩২৫ টাকা করে প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আশেক এলাকার হতদরিদ্রের কাছে এনজিও সংস্থার মাধ্যমে চাল এসেছে বলে বিভিন্নজনের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ১,৩২৫ টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন ভুক্তভোগী।  

ভুক্তভোগীদের তথ্যের ভিত্তিতে হোয়ানক বড়ছাড়া, জামালপাড়া, রাজুয়ার ঘোনাসহ আশেপাশের এলাকার ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী বিধাবা নারী আয়েশা বেগম জানান- "গত ২ মাস আগে এনজিও (বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা) থেকে চালের কার্ড করে দেয়ার কথা বলে আইডি কার্ড এর ফটোকপি, ছবি এবং ১৫শ ২৫টাকা নিয়েছে এবং আমার মাধ্যমে আরও ১৫ জনের কার্ড আমি নিয়ে মেম্বার আশেক এর হাতে জমা করেছি। এরপর থেকে এ পযর্ন্ত কোন ধরণে সহযোগিতা পাইনি। এখন টোটার বিষয়টি নিয়ে আমার বেশ সন্দেহ হচ্ছে।"

এছাড়াও আলাপকালে ভুক্তভোগী মুর্শিদা আকতার, রোজিনা আকতার, আম্বিয়া খাতুন, হামিদা, শামশুন্নাহার, মোহাম্মদ ইউনুছ, আয়েশা,  নুরুন্নাহার, রোজিনা, মিরাজু আকতার, কালা খাতুন, রওশন আরা, মুর্শিদা বেগম, খুরশিদা, রাহামত উল্লাহ, মমতাজ বেগম রোকসানা আকতারসহ গ্রামবাসী অভিযোগ করেন -চাল দেওয়ার জন্য কথিত হিমু এন্টারপ্রাইজের একটি কার্ড দিয়েছে কিন্তু এখনো চালসহ কোনো সহায়তা পায়নি তারা।

জানা যায়- কথিত হিমু এন্টারপ্রাইজের মালিক ইউপি সদস্য আশেক ইলাহীর নাম দিয়ে তিনি ছবি দিয়ে  কার্ড় করে বড়ছড়া থেকে ৫শ, রাজুয়ারঘোনা থেকে ১শ, পূর্বজামাল পাড়া থেকে ১৬টি মোট ৬১৬ কার্ডে সাড়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক ভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মৌলানা আজিজুল হক বলেন, বিষয়টি আমাকে কয়েকজন অবগত করেছ, মেম্বার আশেক চাল দেওয়ার কথা বলে আমার এলাকা থেকে প্রায় ১০০ জন থেকে ১,৩২৫ টাকা করে প্রায় ১লাখ ৩২ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, মেম্বার আশেক চাল দেওয়ার নামে এলাকার হতদরিদ্রের কাছে কার্ড দিয়ে টাকা নিয়েছে কিন্তু এখনও চাল দেয়নি। তবে রমজানের শুরুতে চাল দেবে এমন বিষয় শুনেছি।

এ বিষয়ে হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মোঃ  আশেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি, সামনে কয়েকদিন পর চাল দেওয়ার কথা জানান এবং পরে প্রতিবেদককে সাক্ষাতে সবকিছু খুলে বলবেন বলে জবাব দেন। পরে আবারও যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর কাশেম চৌধুরী (বিএ) বলেন- এ ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই এবং আমার ইউনিয়নে এ ধরনের বাটপারি কেউ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব‍্যবস্থা নেয়া হইবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইয়াছিন মহেশখালীর সব খবরকে বলেন- বিষয়টি আমি জানতাম না এখন জেনেছি, এটা দুঃখজনক কাজ এবং লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।