Advertisement


নিরাপদ নয় মহেশখালীর প্রধান তিন সড়কের কোনটিই


রকিয়ত উল্লাহ।।

মহেশখালীর প্রধান তিন সড়কে দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আর বিভিন্ন স্থানে পিচঢালাই ওঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট- বড় কয়েক শতাধিক গর্ত। এদিকে সড়কের বেহাল অবস্থা হওয়ায় প্রতিদিন ঝুঁকিতে চলাচল করে হাজার হাজার যানবাহন। ফলে প্রতিদিন ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। আর যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষ।

বদরখালী-চালিয়াতলি -মাতারবাড়ী সড়কের নিয়মিত সিএনজি চালক আব্দুল মজিদ জানান এই রোড়ে গাড়ী চালালে দুঃখের শেষ নেই। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় কম পক্ষে ৪০টির ও বেশি গর্ত আছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকে বলে বেড়েছে দুর্ভোগ। প্রতিদিনই প্রায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রচণ্ড দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যানচালক ও যাত্রীরা। ফলে দুএকদিন পর পর গাড়ী মেরামত করতে হয়। আর যা আয় হয় তা গাড়ীর পিছনে খরচ করতে চলে যায়। ধলঘাটার বাসিন্দা জালাল আহমদ বলেন মাতারবাড়ী-ধলঘাটায় দেশের সর্ব বৃহৎ কয়লাবিদুৎ কেন্দ্রে স্থাপনের ফলে প্রকল্পে প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের মালামাল নিয়ে শত শত ছোট-বড় ভারী যানবাহন যাতায়ত করে। তার কারণে ও সড়ক সংস্কার না হওয়ায় দিন দিন সড়কটি মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এবিষয়ে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানান আমরা ইতিমধ্যেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করতেছি। কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে সবগুলো করা সম্ভব হচ্ছে না।

মহেশখালীর প্রধান সড়ক গোরকঘাটা-জনতা বাজার সড়ক। প্রায় ২৭ কিলোমিটার সড়কটি চালিয়াতলি হয়ে কালারমারছড়া, হোয়ানক ও বড় মহেশখালী দিয়ে গোরকঘাটা। এই সড়কে বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কবলে পড়ে হোয়ানক ও কালারমারছড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্ষা মৌসুমে গর্তে পানি জমে থাকায় অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত টমটম চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।ফলে গাড়ী উল্টে নৈমিত্তিক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুসখালী  এলাকার বাসিন্দা বদিউল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি খোলা রেখে সংস্কার না করার কারণে বেশির ভাগ অংশই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কোন উপায় নেই বিধায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টির সময় চালিয়াতলির মূল ষ্টেশনে পাহাড়ী ঢলে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়াও আফজলিয়া পাড়া, ঝাপুয়া, কালারমারছড়া আর্দশ দাখিল মাদ্রাসার সামনে, নোনাছড়ি,আধাঁরঘোনা,ডেইল্যাঘোনা,মিজ্জিরপাড়া,  বড়ছারা, রাজুয়ার ঘোনা, ধলঘাট পাড়া, পানিরছাড়া,  বড় মহেশখালীর এলাকায় সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় প্রায় শতাধিক গর্ত। কিছু স্থানে লোকজন গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে পার হচ্ছে। এই সড়কটি সংস্কারের জন্য জন্য কাজ করতে দেখা যাচ্ছে প্রায় বছর খানেক। কিন্তু ধীর গতিতে কাজ হওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এই বিষয়ে হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন প্রধান সড়কের কাজ করোনাকালীন বন্ধ ছিল। ইতিমধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।আশা করি অতি শীঘ্রই সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দুর হবে।

অন্যদিকে আরেক প্রধান সড়ক চালিয়াতলি - শাপলাপুর-গোরকঘাটা সড়কের চিত্র ছোট-বড় গর্তে ভরপুর। চালিয়াতলি হয়ে শাপলাপুরে সড়কে ডুকতেই বড় বড় চারটি গর্ত। যেখানে প্রতিনিয়ত টমটম,মোটরসাইকেল উল্টে যায়।তা সংস্কার করার কোন উদ্যোগ নেই। স্থানীয় ইউপি মেম্বার লিয়াকত আলী জানান চালিয়াতলি হয়ে শাপলাপুর সড়কে ডুকতেই যে বড় বড় গর্ত আছে তাতে প্রতিনিয়ত গাড়ী উল্টে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।স্থানীয় ভাবে গর্ত গুলো ভরাট করার উদ্যোগ নিলেও বৃষ্টির কারণে বারবার গর্ত গুলো সৃষ্টি হচ্ছে।তাই এর স্থায়ী সমাধান করা দরকার। অন্যদিকে আরকটু দুরে ষাইটমারা দিকে আরো বড় বড় কয়েকটি গর্ত।এ ছাড়াও জেএমঘাট, শাপলাপুর,ছোট মহেশখালীর সহ একাধিক স্থানে রয়েছে ছোট বড় ৫০টির বেশি গর্ত। কিছুদিন আগেও ছোট মহেশখালীর মুদিরছড়া এলাকার কালভার্ট ধসে মাটি সরিয়ে গেলে ব্রীজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রিয়ান সিকদার ও উপজেলা প্রকৌশলীর উদ্যোগে ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে। এছাড়াও দেখা যায় ছোট -বড় কিছু গর্ত ভরাট করতে।

এবিষয়ে মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ ধর জানান গোরকঘাটা কালারমারছড়া জনতাবাজার সড়কে সংস্কার কাজ চলমান আছে। তাছাড়া ও শাপলাপুর,মাতারবাড়ী রোড়ে যে গর্তগুলো আছে সেগুলো ও ভরাট করা হচ্ছে।বৃষ্টির জন্য কাজ করতে সমস্যা হলেও আমরা মহেশখালী মানুষের ভোগান্তির দূর করে স্বস্তির সড়ক উপহার দেব।

////এ.ডি// আর.ইউ//