Advertisement


মাতারবাড়িতে সাংবাদিক দেখে কেনো তারা সটকে পড়লেন?


নিজস্ব প্রতিবেদক।।
২৩ এপ্রিল -মঙ্গলবার। দিনের এক সময়ে মহেশখালীর মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে কিছু একটা হচ্ছে মর্মে খবর আসে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে। দ্রুত ওই এলাকায় পৌঁছান কয়েকজন সংবাদকর্মী।

গিয়ে জানা গেলো- স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের দিন-তারিখ পড়েছে। তথ্য রয়েছে- এ নিয়ে কমিটিতে আসতে আগ্রহিদের মাঝে ফরম বিতরণের (বিক্রয়) এর কাজ চলছিলো। এ বিতরণের মূল দায়িত্ব পড়ে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রেজা খান এর উপর। মি. খান এ ফরম বিতরণের ফাইল ও নির্দেশনা দেন তার অনুগত এক শিক্ষক ও অফিস সহকারীকে।

তথ্য রয়েছে- বিতরণের শুরুর দিকে মোট ৪টি  ফরম বিক্রি করার পর হঠাত্ করেই রহস্যজনক ভাবে এই ফরম বিতরণ এর কাজ বন্ধ করে দেন তিনি। বিতরণ বন্ধ করে দেওয়ার সময় ওখানে ফরম সংগ্রহ করতে আসা একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে- বিদ্যালয়টির পরিচালনা (ম্যানেজিং) কমিটির হালফিল সভাপতি মানিক চৌধুরীকে সাথে নিয়ে স্থানীয় ভাবে একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। আর এই সিন্ডিকেটে যোগ দেন প্রধান শিক্ষক রেজা খান। তাদের লক্ষ্য- যে কোনো উপায়ে আবারও নতুন মেয়াদে মি. মানিক চৌধুরীকে সভাপতি করা। ফরম বিতরণের এক পর্যায়ে সিন্ডিকেট থেকে সিদ্ধান্ত এলো- ফরম বিতরণ বেশী হলে -মানে প্রার্থী বেশী হলে বা আরও যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তারা প্রার্থী হলে মি. চৌধুরীকে আবারও 'সভাপতি বানানো' দুষ্কর হয়ে পড়বে, তাই এখনই ফরম বিতরণ বন্ধ করে সে সব লোকজনকে প্রার্থী হাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। যেমন সিদ্ধান্ত -তেমনই কাজ। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিতরণ।

ততক্ষণে মোট ৪টি ফরম বিতরণ করা হয়, এই ৪টি ফরম বিতরণের পর কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাত্ করে এই ফরম বিতরণ স্থগিত করে দেন মাস্টার রেজা খানের নির্দেশে। এ সময় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ফরম সংগ্রহ করতে আসা লোকজনের মধ্যে এক ধরণের হট্টগোল পড়ে যায়, সৃষ্টি হয় মৃদু উত্তপ্ত পরিবেশ।

বড় তথ্য হলো- স্কুলের অফিসে বসে এই বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করছিলেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মানিক চৌধুরী।

স্কুলের এমন পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মাঝে কথা হচ্ছে শোনে ওখানে হাজির হন স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী। এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত টের পেয়ে আগ্রহীদের চাহিদা থাকার পরও কোনো প্রকার ফরম বিতরণ না করে ওখানে থাকা একজন শিক্ষক ও সভাপতি মানিক চৌধুরী দ্রুত ওই স্থান থেকে সটকে পড়েন। এ সময় বিদ্যালয়টির এক অফিস সহকারীও তড়িঘড়ি করে অফিস গুটিয়ে বেরিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ অফিস সহকারী বলেন- "সকাল থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি অফিসে বসা ছিলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে আর কাউকে ফরম দেওয়ার অনুমতি দেয়নি, ফলে অনেকে ফরম দিতে পারিনাই- তাই তারা ফরম না নিয়ে চলে গেছেন।" পরে এই অফিস সহকারীও অফিস গুটিয়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে ফরম বিতরণ ও ম্যানেজিং কমিটির ভোট নিয়ে এক ধরণের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। মূলতঃ মাস্টার রেজা খান ও সভাপতি  মানিক চৌধুরীর অশুভ যোগসূত্রতার কারণে এমনটি হয়েছে বলে স্থানীয় অনেকের অভিযোগ।

এলাকার একাধিক সূত্র বলছে- ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটির সভাপতি হওয়া যেনো এক রহস্যময় লাভজনক ব্যাপার।

রোকন /২৩৭