নিজস্ব প্রতিবেদক।। মহেশখালীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ঘিরে ভুল পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধ করে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের কৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাসুদের বিরুদ্ধে। সাপ্তাহব্যাপী এ আয়েজনকে ঘিরে নানা অনিয়ম হয়েছে বলে একাধিক সূত্র থেকে দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, এ আয়োজনের অংশ হিসেবে মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের বানিয়েকাটা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গত ২৮ নভেম্বর (শুক্রবার) উপজেলা প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ–২০২৫ উপলক্ষে গরু ও ছাগলের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে মোট ৯০০টি পশুকে টিকা দেওয়ার দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের হিসাবে প্রতিটি ৩'শ করে ধরা-বাঁধা সংখ্যা অনুপাতে ৩০০টি ফ্রি ভ্যাকসিন, ৩০০ গরুকে ক্ষুরা–বাদলা–তড়কা ভ্যাকসিন এবং ৩০০টি ছাগলকে পিপিআর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের হাতে থাকা তথ্য ও উপস্থিতির তথ্যে বড় ধরনের অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তারা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। মাত্র তিন ঘণ্টায় কিভাবে ৯০০ গরু–ছাগলকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাস্তবে মাঠে উপস্থিত পশুর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ২৫০টি গরু এবং প্রায় ৫০টি ছাগল। অথচ টিকাদানের হিসাব দেখানো হয়েছে ৬০০ গরু ও ৩০০ ছাগলের। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার (ইউএলও) ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ছবিতেও দেখা যায় অল্প সংখ্যক পশু। ফলে প্রশ্ন উঠছে, মাঠে উপস্থিত না থাকা অতিরিক্ত ৩৫০ গরু ও ২৫০ ছাগলের টিকা কোথায় গেল? সংখ্যায় এমন গরমিল কি ‘কারসাজি’ নয়?
এদিকে সম্প্রতি ছাগলের পিপিআর ভ্যাকসিন ইউনিয়নভিত্তিক ৬–৮ দিনের ওয়ার্ডভিত্তিক কার্যক্রমে দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ইউনিয়নে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রোগ্রাম শেষ করে দেওয়া হয়। এতে প্রত্যন্ত গ্রামের শত শত মানুষ প্রয়োজনীয় প্রাণিসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ধরনের তড়িঘড়ি কর্মসূচি ও সংখ্যাগত গরমিল পুরো টিকাদান কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
গ্রাম পর্যায়ের উদ্যোক্তা মোমেনা বেগম, কালা মিয়া, আজগর আলী বলেন, “তড়িঘড়ি করে ভ্যাকসিন কার্যক্রম দুপুরের আগে শেষ করেছে। আমরা গরু–ছাগল নিয়ে গিয়ে ভ্যাকসিন দিতে না পেরে ফেরত এসেছি। এটি লোক দেখানো কার্যক্রম ছিল, এর সুফল স্থানীয়রা ভোগ করতে পারেনি।”
এদিকে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ নিয়ে অন্যান্য অনুষ্ঠান ও আয়োজনকে ঘিরেও ভুয়া বিলে নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে, সরকারি বরাদ্দ আত্মসাত এর জন্যই এমনটি করা হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “টিকাদানে কোনো ধরনের গরমিল হয়নি। আপনার কাছে অভিযোগ থাকলে আমাকে লিখিতভাবে জানান” এই কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
