Advertisement


হোয়ানকে গ্রাম্য পশু চিকিৎসক খুন, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন


রকিয়ত উল্লাহ ও সুব্রত আপন।।
মহেশখালীতে আবারও এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কালারমার ছড়া ও হোয়ানক ইউনিয়নের সীমানা এলাকার কালারমার ছড়া অংশের মিজ্জিরপাড়া ছড়ারলামা নামক স্থানে আব্দুস শুক্কুর নামের ৬০ বছর বয়সি এই ব্যক্তিকে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে খুন করে। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনক ৪ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে৷ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন- ঘটনার সাথে জড়িত সব ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। নিহত ওই ব্যক্তি হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গ্রাম পর্যায়ের একজন পশু চিকিৎসক। এদিকে শনিবার সকালে নিহতের জানাজা শেষে স্থানীয় ভাবে দাফন করা হয়।


নিহতের বড় সন্তান নুরুল আবছার জানান- তাদের এক খণ্ড জমির উপর প্রতিপক্ষের লোকজন আগের দিন রাতে পানের বরজ করার জন্য কাঠমো নির্মাণ করার খবর পায় তার পিতা। শুক্রবার সকালে তিনি একা প্রধান সড়কের ডেইল্যাঘোনা এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে ছড়ারলামা নামক ওই স্থানে বিষয়টি দেখতে যান। এ সময় ওই স্থানে আগে থেকে অবস্থান করা জনৈক মোর্শেদ, মকছুদ, জয়নালসহ ১০-১২ জন ব্যক্তি পূর্বপরিকল্পিতভাবে লোহার রড, হাতুড়ি ও দা নিয়ে তার পিতার উপর হামলা করে। এ সময় তিনি তাদের বার বার বুঝিয়েও নিবৃত করতে পারেনি। এক পর্যায়ে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়।

মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ প্রনব চৌধুরী বলেন- জমির বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন- জমির মালিকানার স্বপক্ষে তারা উচ্চ আদালত থেকে রায় পেয়েছেন, কিন্তু জমিটি একটি পক্ষের দখলে ছিল। শুক্রবার সকালে আব্দুস শুক্কুর ওই জমিতে একা যান এবং উচ্চ আদালত থেকে রায় পাওয়ার বিষয়টি প্রতিপক্ষের লোকজনকে বলেন। এ সময় মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা আব্দুস শুক্কুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ঘটনার পরপরই মহেশখালী থানা পুলিশের একাধিক ইউনিট ওই এলাকায় পৌঁছান। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুল ইসলাম রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনক ৪ ব্যক্তিকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন- মোরশেদ আলম, মকসুদ আলম, আবুল কাশেম ও আব্দুল মান্নান।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান- এমন ঘটনায় পুলিশ জিরো ট্রলারেন্স নীতিতে অবস্থান করবে। অপরাধের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নাই। ঘটনার পরপরই পুলিশ এসে অভিযান শুরু করেছে, খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। পুলিশ পরিপূর্ণ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

এদিকে ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে মৃত্যুর খবরটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান সড়কের পাশেই নিহতের বাড়ি। উত্তেজিত এলাকাবাসী খুনিদের গ্রেফতার দাবিতে প্রধান সড়কের ডেইল্ল্যাঘোনা অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এ সময় সড়কের দু'পাশে যানজট সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের একাধিক ইউনিট এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। রাত ১০টার দিকে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হয়।

এদিকে শনিবার সকাল ১১ টায় জানাজা শেষে স্থানীয় ভাবে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় এলাকার সংসদ-সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিকসহ বিভিন্নজন উপস্থিত ছিলেন।