Advertisement


মহেশখালীতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা কেন্দ্র নাই, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

দ্বীপে কারিগরি শিক্ষায় আলো ছড়াচ্ছে ডিজিটাল কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক।। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে মহেশখালী, যার মধ্যে গভীর সমুদ্র বন্দর ও কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যতম । মহেশখালীতে এত উন্নয়নের ছোঁয়া পাওয়া সত্ত্বেও মহেশখালীতে এখন শিক্ষার হার মাত্র ৩০ শতাংশ। তাছাড়া মহেশখালীতে যথেষ্ট সুযোগের অভাবে কারিগরি শিক্ষার হার বা বর্তমান প্রযুক্তির সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচয় খুব একটা হয়ে উঠে না । যার কারণে মহেশখালীর জনগণ সমষ্টিগতভাবে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে । এই মহেশখালীর সাধারণ জনগণকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকেই কাজ করে যাচ্ছে । তার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হল ডিজিটাল কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার । এটি বীর মুক্তিযোদ্ধা খগেন্দ্র লাল শীল এন্ড টিপু রানি সন্স  ফাউন্ডেশন এর একটি প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে দিকে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় । মহেশখালীর অদক্ষ শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ভিত্তিক দক্ষ শিক্ষার্থী গঠনে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাদের তথ্যমতে এখনো পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৭৪৩ জন শিক্ষার্থী কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করেছে। এখানের অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এখান থেকে কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করেছে। তাছাড়া এখান থেকে কম্পিউটার শিক্ষা গ্রহণ করে অনেকে কয়লা বিদ্যুৎ এবং বড় বড় প্রজেক্টর কাজ করছে। আবার অনেকেই নিজেরাই কম্পিউটার ভিত্তিক বিভিন্ন কাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে নিজেদের মতো ব্যবসা করছে। এরই মধ্যে এই বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান টিপু রাণী সুশীল এবং বর্তমান পরিচালক শ্রী তন্ময় সুশীল বিশ্ব ।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বলেন- কারেগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন প্রাপ্তের পরে আমাদের এখান থেকে ১০০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা অংশগ্রহণ করে এবং তার মধ্যে ৮৮ জন সাফল্যের সাথে কৃতকার্য হয়, এর মধ্যো একজন অনুপস্থিত ছিল বাকি ১১ জন পরীক্ষায় প্রকৃতকার্য হয়। তার আগেও অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ কারিগর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষায় ৩বার অংশগ্রহণ করি। প্রথমবারে ২৮ জন, পরের বার ৪২ জন এবং তৃতীয়বার ৩৫ জন পাশ করে। প্রতিবারই ১০০% কৃতকার্য করে আমাদের শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন- সীমিত সংখ্যক আসন এবং পরীক্ষার কেন্দ্র কক্সবাজার হওয়ার কারণে অনেকেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান না আবার অনেক অভিভাবক  নিজেদের সন্তানকে এই সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠাতে চান না ।

গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষায় এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিল, তবে জুলাই মাসে বৃষ্টি আর সমুদ্র উথ্থাল থাকায় জন শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে এই সমুদ্র পাড়ি দেওয়া অনেক বড় ঝুঁকির বিষয় ছিলো। সে সময় নৌ-চলাচল সীমিত থাকলেও এলাকার সংসদ-সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এর সহযোগীতায় পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা দুইটি নৌকা নিয়ে সেবার শিক্ষার্থীরা কোনোমতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তবে বৃষ্টির কারণে পরীক্ষা সামগ্রীসহ শিক্ষার্থীরা ভিজে একাকার হয়ে যায়। এমন অবস্থায় কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারেনি।


তিনি আরও বলেন- এ অবস্থায় তারা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কাছে মহেশখালীতে কেন্দ্রের জন্য আবেদন করেছিলেরমন কিন্তু তাদের প্রতিষ্ঠানটি প্রথম অনুমোদন প্রাপ্ত হওয়ার কেন্দ্রের বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। তবে আবারও আবেদন করা হয়েছে, তারা আশাবাদী আগামী পরীক্ষা অবশ্যই মহেশখালীতে হবে এবং যদি মহেশখালীতে হয় সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়বে এবং কষ্টও দূর হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদিত ৫০ জন আসন ভিত্তিতে দুটি ট্রেড চালু আছে। কিন্তু শিক্ষার্থী সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ার কারণে সব শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এরইমধ্যে আসন বৃদ্ধির জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আবেদন করা হয়েছে, যদি বোর্ড কর্তৃক আসন বৃদ্ধি করা হয় তাহলে আমাদের দ্বীপের মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবে এবং অনেক বেশি শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হবে বলে তিনি মনে করেন।