Advertisement


মহেশখালীর সব খবর'এ খবর প্রকাশের জের/ মাতারবাড়ির তহসিলদার গিয়াস প্রত্যাহার



সব খবর ডেস্ক রিপোর্ট।। মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে গিয়াস উদ্দীন যোগদানের কয়েকদিনের মাথায় বিতর্কের মুখে তাকে মাতারবাড়ি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ওই অফিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নতুন কর্মকর্তা। -তথ্য দায়িত্বশীল সূত্রের। আগামীকাল থেকে এ কর্মকর্তা মাতারবাড়িতে অফিস করবেন৷ জাহেদুল ইসলাম নামের নতুন যোগদান করা এ কর্মকর্তা এর আগে কক্সবাজার সদর ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন। সাম্প্রতি গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্বপালনে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে মহেশখালীর সব খবরে একটি অনুসন্ধানি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। অবশেষে প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েকদিনের মাথায় তাকে প্রত্যাহার করা হলো। দুর্নীতির অভিযোগগুলো নিয়েও তদন্ত হবে এবং প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন।


দায়িত্বশীল সূত্রে জানাগেছে-গত মাসখানেক আগে মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদারকে নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে অন্যত্র বদলি করা হয়। এ অবস্থায় মাতারবাড়ি ভূমি অফিসে এ পদটি শুন্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সরকারি কার্যক্রম গতিশীল রাখতে হোয়ানকের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা(তহসিলদা) গিয়াস উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে মাতারবাড়ি ভূমি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়।


অভিযোগ রয়েছে- দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ঘুষ-দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে গিয়াস উদ্দিন। অল্প দিনে নিজস্ব দালাল সিন্ডিকেট তৈরি করে সেবাগ্রহীতা লোকজনের উপর নজিরবিহীন হয়রানি করতে থাকে ঘুষ আদায়ের কৌশল হিসেবে। সরকারের ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে নিয়মিত কর মূল্যের ১০ থেকে ১০০গুণ পর্যন্ত বেশী ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।


এ নিয়ে গত ১১ মার্চ মহেশখালীর সব খবর'এ 'মাতারবাড়ি ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া সরকারি সেবা পাওয়া যায় না' শিরোনামে ভিডিওযুক্ত একটি অনুসন্ধানি রিপোর্ট  প্রকাশ পায়। একইসাথে মাতারবাড়ির এক সাবেক জনপ্রতিনিধি তার ফেসবুক ওয়ালেও এ তহসিলদারের সাক্ষাৎ দুর্নীতির কিছু তথ্য তুলে ধরেন। একই সময় বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ফেসবুক ব্যবহারকারিদের অনেকই দুর্নীতিবাজ এ ব্যক্তির বিষয়ে নিন্দা প্রকাশ করতে থাকেন।


এদিকে ওইদিন রাতে সংবাদ প্রকাশের কিছু সময়ের মধ্যে সংবাদটি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে আসে এবং এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণের উদ্যোগ নেন। অবশেষে গতকাল মাতারবাড়ি ভূমি অফিসে একজন নিয়মিত তহসিলদার পদায়ন করে বিতর্কিত তহসিলদার গিয়াস উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়।


এ প্রসঙ্গে মহেশখালীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মহেশখালীর সব খবরকে জানিয়েছেন -বিগত মাসখানেক আগে মাতারবাড়ি ভূমি অফিসে তহসিলদারের পদ শুন্য হওয়ায় অফিসের কাজ চালু রাখতে গিয়াস উদ্দিনকে অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে ছিল, গতকাল মাতারবাড়ি ভূমি অফিসের জন্য নতুন তহসিলদার যোগদান করেছেন। আগামীকাল থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। নতুন যোগ দেওয়া তহসিলদার জাহেদুল ইসলাম একই সাথে শাপলাপুরের দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি।


সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরও বলেন- খবর প্রকাশের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে মাতারবাড়ির এক সাবেক জনপ্রতিনিধি প্রশাসনে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে অভিযোগ সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ভূমি সেক্টরের মতো এমন জনসম্পৃক্ত বিষয়ে নাগরিকদের অবশ্যই সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন- মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের জন্য নতুন তহসিলদারকে বলা হয়েছে।


এদিকে আমাদের মাতারবাড়ি সংবাদদাতা আব্দুর রহমান রিটন জানিয়েছেন- মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে বিতর্কিত তহসিলদার গিয়াস উদ্দিনকে প্রত্যাহারের খবর এলাকায় জানাজানি হলে সাধারণের মাছে স্বস্তি ফিরে এসেছে, নতুন তহসিলদার ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত ভাবে অফিস পরিচালনা করবেন বলে তারা আশা করছেন। এ অফিসে সেবা নিতে এসে হয়রানি ও ঘুষ-দুর্নীতির শিকার ধলঘাটা ও মাতারবাড়ির একাধিক ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে মি. রিটন জানান- এমন ঘুষ-দুর্নীতির তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটি আশা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ প্রসঙ্গে আমাদের আগের প্রতিবেদনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ -অভিযোগের প্রমান মেললে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। moheshkhali


এমআর/


[ অনুমতি ছাড়া আমাদের লেখা কপি করা বেআইনি ]