শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক ফেসবুক পোস্টে এস এম সুজা উদ্দিন নিজেই এ কথা জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, "আলহামদুলিল্লাহ। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব।"
শুক্রবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন এ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
পরে সন্ধ্যার দিকে দলটির আত্মপ্রকাশ হয়। জুলাইয়ের শহীদ ইসমাইল হোসেন রাব্বির বোন মিম আক্তার দলটির নাম ঘোষণা করেন। নতুন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
এ ছাড়া দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- সামান্তা শারমিন ও আরিফুল ইসলাম আদীব। ১নং যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে নুসরাত তাবাসসুমকে ও সদস্য সচিবের পদ দেওয়া হয়েছে আখতার হোসেনকে।
সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিবের পদ পেয়েছেন তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিবা এবং ১নং যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেল। পাশাপাশি হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীকে মুখ্য সমন্বয়ক এবং আব্দুল হান্নান মাসউদ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও নতুন দলের মুখ্য দায়িত্ব নিতে যাওয়া হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গণভবন ও সংসদ ভবনে কে যাবে, তা নির্ধারণ করবে দেশের খেটে খাওয়া জনগণ।
তিনি বলেন, গণভবনে কে যাবে সেটি নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ থেকে, ভারত থেকে সেটি নির্ধারিত হবে না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ সংসদে কে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের খেটে খাওয়া জনতা। এ সংসদে কে বসবে, সেটি নির্ধারণ করবে এ ভূখণ্ডের মানুষ।
পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও নতুন রাজনৈতিক দলের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন পর্যন্ত যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবার ত্যাগের মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি চারশটি থানায় পৌঁছে কমিটি দিয়েছে। অবশেষে সবার সহযোগিতায় আজ ঐতিহাসিকভাবে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার দ্বারপ্রান্তে উপনিত হয়েছি। এই চলার পথে জুলাই অভ্যুত্থানের আত্মত্যাগকারী শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারাসহ যারা আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ও তাদের আত্মত্যাগকে স্বীকার করছি। আগামীতে আমরা সবার ত্যাগের মূল্যায়ন করব।
এ সময় তরুণদের হাত ধরে যে নতুন রাজনৈতিক দল আসতে যাচ্ছে সে দলের কর্ণধারদের উদ্দেশ্যে নাসির বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বে যে দলটি আসতে যাচ্ছে, তাদের এ পথচলায় যারা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সবার ত্যাগের মূল্যায়ন করবেন আপনারা। বিভাজনের রাজনীতি বাদ দিয়ে আগামীতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির এ নেতা।
এদিকে এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র সদস্য করা হয়েছিলো মহেশখালীর সন্তান এ এস এম সুজাকে। এ এস এম সুজা একজন নীতি বিশ্লেষক ও সাংবাদিক। সুজা উদ্দিনের বাড়ি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নে।
জানা গেছে- সুজা আমেরিকান সরকারের লিডারশীপ প্রোগ্রামে সম্প্রতি অংশগ্রহণ করেন এবং আমেরিকার University of Arizona এর ভিজিটিং স্কলার ছিলেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করেন সিমান্তসহ। তিনি আন্তর্জাতিক ১৫ টার বেশি মিডিয়াতে কাজ করেছেন তারমধ্যে টেলিগ্রাফ, বিবিসি, স্কাই, সিএনএন, ফেডারেল মিডিয়া অন্যতম। তিনি সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে এক্সপার্ট হিসাবে ভ্রমণ করে পুরস্কার জিতেন যা আরব নিউজে হেডলাইন হয়। তিনি সাংবাদিকতা নিয়ে Stamford University পড়ালেখা করেন। তিনি আন্তর্জাতিক অনেকগুলো পিএইচডি প্রোগ্রামে কন্ট্রিবিউট করেন। তিনি রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। এর আগে তিনি বিহারি ও অন্যন্য মাইনোরিটি গ্রুপ নিয়ে কাজ করেন। তার রিপোর্ট Reuters এর মানবাধিকার প্রেস পুরুস্কার পান। তিনি আন্তর্জাতিক অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান Artolution এর মাধ্যমে পলিসি এডভোকেসি নিয়ে কাজ করেন। ছাত্র অবস্থায় তিনি ডিবেটর ছিলেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার মাইনোরিটি ও রিফিউজি এক্সপার্ট নামে পরিচিত।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের চলমান লড়াই সফল করার লক্ষ্য তার সক্রিয় অবদান রয়েছে বলে জানা গেছে।