মৃত্যুর ১৫ দিন পর গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) আরিফের মৃতদেহ বড় মহেশখালীর দেবাঙ্গাপাড়ার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে আজ বুধবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় তার জানাজা শেষ করে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্য ইফতাদুল হাসান তামিম তার মামার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, “ আরিফুল ইসলাম আমার মামা, ২৭ মে সকালে রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় ছোট মহেশখালী লম্বাঘোনার মোহাম্মদ বাদশার ছেলে ওসমান নামের এক যুবকের অতর্কিত হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন। ঘটনার আগে তাদের মধ্যে কোনো একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হলেও সেটি তাৎক্ষণিকভাবে মিটমাট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরদিন ওসমান ঘুমন্ত অবস্থায় মাথায় ভারী কোনো বস্তু, সম্ভবত লোহার রড দিয়ে, আঘাত করে পালিয়ে যায়।"
তিনি আরও বলেন- গুরুতর আহত আরিফকে রুমমেটরা উদ্ধার করে দুবাইয়ের একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন- মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়- মোহাম্মদ আরিফ পরিবারের আর্থিক সংকট দূর করার আশায় মাত্র দুই মাস আগে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ভিসা ও টিকিটের টাকা জোগাড় করে দুবাই গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একটি কারখানার কাজ শুরু করেছিলেন। অভিযুক্ত রুম সহকর্মী মোহাম্মদ ওসমানও একই উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের লম্বাঘোনা এলাকার বাসিন্দা।
দুই থেকে মহেশখালীর একাধিক ব্যক্তি জানান- ঘটনার আগে কিছুদিন ধরে আরিফ ও ওসমানের মধ্যে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল। ঘটনার দিন সকালে সে উত্তেজনার জের ধরেই ঘুমন্ত আরিফের ওপর হামলা করা হয়।
নিহত আরিফের অকালমৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকায় গভীর শোক বিরাজ করছে। তার মরদেহ মহেশখালীর বাড়িতে পৌঁছলে এলাকায় কান্নার রোল পড়ে যায়। পরে আজ (বুধবার) সকাল ১০ টায় বড় মহেশখালীর দেবাঙ্গাপাড়া বাজার সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তাকে এক নজরে দেখতে অসংখ্য গুণগ্রাহী, আত্মীয়-স্বজন ও শোকাহত জনতা জানাজার মাঠে ভিড় জমান।
এদিকে পাষণ্ড রুমমেট ওসমান এর বিচার দাবি করেছেন নিহতের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও মহেশখালীর সচেতন সমাজ।