Advertisement


ইরানে মাটির নিচে মোসাদের গোপন ঘাঁটি আবিস্কার, ৪০০ জন আফগান গুপ্তচর আটক?

 


সব খবর ডেস্ক।। ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার দীর্ঘমেয়াদি নজরদারি ও গোপন অভিযানের পর রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠে মাটির নিচে স্থাপিত একটি গোপন মোসাদ ঘাঁটি উন্মোচন করা হয়েছে। এ অভিযানে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অন্তত ৪০০ জনকে আটক করা হয়েছে। ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্যমতে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বৃহৎ ও সফল একটি বিদেশি গোয়েন্দা মোকাবিলা অভিযান।

সূত্র জানিয়েছে, ঘাঁটিটি তেহরান থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত শিল্পাঞ্চলের নিচে অবস্থিত ছিল। বহুস্তরবিশিষ্ট এই ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় ছিল আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামো—সার্ভার রুম, স্যাটেলাইট সংযোগ ব্যবস্থা, অস্ত্রাগার ও মনিটরিং কক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এখান থেকেই ইরানের অভ্যন্তরে নাশকতা, গুপ্তচরবৃত্তি ও সাইবার হামলার পরিকল্পনা পরিচালিত হতো।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) ও গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কয়েক মাস ধরে এ ঘাঁটির ওপর নজরদারি চালায়। সন্দেহভাজনদের ফোন কল ট্র্যাকিং, আর্থিক লেনদেন বিশ্লেষণ এবং অভ্যন্তরীণ তথ্যদাতাদের সহায়তায় তাদের শনাক্ত করা হয়।

গত সপ্তাহে একটি পরিকল্পিত অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী ঘাঁটিটি ঘিরে ফেলে। প্রায় ১৮ ঘণ্টার টানা অভিযানে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে এনে ৪০০ জনকে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে—১৭ জন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত, ৬২ জন উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গুপ্তচর এবং ১২৮ জন স্থানীয় সহযোগী, যারা ওয়ার্কশপকর্মী ও সাংবাদিকতার ছদ্মবেশে কাজ করছিল। বাকি ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে ঘাঁটির রসদ ও তথ্য জোগানদাতা হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি করা হয়। ইরানি সূত্র বলছে, আটককৃতদের অধিকাংশ আফগানিস্তানের নাগরিক।

তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ গুপ্তচর প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি, জাল নথিপত্র ও বিদেশি মুদ্রা।

ইরানি নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানায়, মোসাদের এই ঘাঁটি মূলত তিনটি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো—ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা সৃষ্টি এবং সাইবার হামলার মাধ্যমে কৌশলগত অবকাঠামোয় ক্ষতি সাধন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এ অভিযানের প্রশংসা করে বলেন- "বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই আমাদের প্রগতি ও নিরাপত্তাকে ব্যাহত করতে পারবে না। যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।"

এ বিষয়ে ইরানের বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিদেশি অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

অন্যদিকে, ইসরায়েল এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম এই খবরকে "সন্দেহজনক" ও "অতিরঞ্জিত" বলে উল্লেখ করেছে। তবে রাশিয়া ও চীন এ অভিযানকে ইরানের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে।

বিভিন্ন বিদেশি জার্নাল অনুসরণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হচ্ছে, এটি আরও আপডেট করা হবে। ]