সাগর উত্তাল থাকায় উপজেলার ছোট মহেশখালী, কুতুবজোম, মাতারবাড়ির জালিয়াপাড়া ও ধলঘাটা ঘুরে দেখা গেছে, উপকূলীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করছে। সাগরের উপর ঘনীভূত লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় হঠাৎই জোয়ারের পানি স্বাভাবিক চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছোট মহেশখালীর মূল সড়ক। পানি ঢুকে পড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে। অনেকের সম্পদ পানির তোড়ে ভেসে যায়।
এদিন সকালে কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় দানু মিয়া (৪২) নামের এক ব্যক্তি জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা যান। পরিবার জানায়, দানু মিয়া মৃগী রোগে ভুগছিলেন। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হন। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই মৃত্যু স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কায় বদরখালী নৌ-চ্যানেলে অবস্থানরত বহু ফিশিং ট্রলারের জাল ছিঁড়ে গেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য তীরে ফিরে এসেছে। জেলেরা জানান, কয়েকদিনের খরচের জন্য সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন, কিন্তু উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের মুখে পড়ে প্রায় সব জাল ছিঁড়ে গেছে। জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জেলে বসে ছেঁড়া জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত। তারা দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় পড়েছেন।
এদিকে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সকাল ১১টা থেকে মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে সী-ট্রাক চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সাগর তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষজনকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দুর্গত এলাকাগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্যাহ জানান, 'উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, একাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, 'বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।