Advertisement


বড় মহেশখালীর ইয়াবা সিন্ডিকেট ‘আরিফ গ্যাং’ এর দৌরাত্ম্য, থামানোর কেউ নেই?

বড় মহেশখালীর পশ্চিম ফকিরাঘোনা এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা সিন্ডিকেট ‘আরিফ গ্যাং’ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এর অন্ত নেই। এ চক্রটির বেপরোয়া আচরণ, মাদক বিকিকিনি ও সেবনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। চক্রটির প্রধান আরিফের নেতৃত্বে চলা এ বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে উৎকণ্ঠায় আছে স্থানীয় সচেতন অভিভাবক মহল ৷

সূত্রের লিখিত অভিযোগ থেকে জানাযায়, বড় মহেশখালীর এ সিন্ডিকেটের সাথে এলাকার অপরাপর ইয়াবা সিন্ডিকেটের মাদক সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক সখ্যতা রয়েছে। চক্রের প্রধান ফকিরাঘোনার আরিফ এর আস্তানায় রয়েছে মহেশখালীর চিহ্নিত দাগী আসামী ও ইয়াবাসেবীদের উঠাবসা ৷ জানাগেছে -এ আরিফের ছত্রছায়ায় উক্ত ইয়াবা সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে স্থানীয় আবু ছৈয়দের পুত্র মোঃ মাজেদ, মোঃ এনাম, চাঁন গাজীর ছেলে মোঃ গাজীসহ অনেকেই প্রমুখ ৷ এ চক্রের সাথে নারী সদস্যও যুক্ত আছে বলে সূত্রের অভিযোগ। সম্প্রতি মাদক সংক্রান্ত আলোচিত অনেক দাগি আসামি তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালানার অনেকটা কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে এ আরিফের আস্তানাটিই ব্যবহার করে আসছে বলে সরকারি সূত্রে প্রকাশ। এ চক্রের সাথে বিদেশী অর্থ যোগানের অভিযোগ ও এ অর্থে অধিক লাভজনক ইয়াবা ব্যবসা চলছে বলেও তথ্য রয়েছে।

সূত্র জানায় সম্প্রতি মহেশখালী থানায় নতুন ওসি হিসেবে যোগদান করেছেন মাদক-জগতের আতংক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ওসি দিদারুল ফেরদৌস। তিনি যোগদান করার পর এ আস্তানার সন্ধান পান। পরে পুলিশ গোয়েন্দা সূত্র ব্যবহার করে এখানে অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশ আরিফের আস্তানা থেকে ভিন্ন এলাকা থেকে বৈঠকে আসা এক তালিকাভুক্ত দাগি সন্ত্রাসীকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। সে অভিযানে পালিয়ে যায় গ্যাং লিড়ার আরিফ।

এ অভিযানের পর ৮জুলাই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ধারায় মামলা দায়ের করে থানা পুলিশ ৷ যার মামলা নম্বর ১০/১২৫ । এ মামলার অন্যতম দুই নম্বর আসামি আরিফ। পুলিশ তাকে ধরতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে বলেও সূত্রে প্রকাশ।

এদিকে পুলিশের অভিযানে ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফ ও তার গ্রুপের সদস্যরা এলাকায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে, তারা পুলিশের কাছে তথ্য দেওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার মুসল্লিদের টার্গেট করে নানা তৎপরতা চালাতে থাকে। এতে এ গ্রুপের অপ-তৎপরতায় আতংকিত রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়রা তাদের এ তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে গ্যাং লিড়ার আরিফ মোবাইল ফোনে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধিকে হত্যার হুমকিও দেয় বলে সূত্রের অভিযোগ। এতকিছুর পরেও তার আস্তানায় মাদক তৎপরতা অব্যাহত থাকায় স্থানীয় মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই মাদক আস্তানায় ঢুকে সিন্ডিকেটের সদস্যদের তাড়া করে বলে জানাগেছে।

স্থানীয়রা জানান -মূলতঃ বড় মহেশখালীর দেবাঙ্গাপাড়া, ফকিরাঘোনা, ফকিরাকাটা, মগরিয়া কাটা, বড় ডেইলসহ হোয়ানক, পৌরসভা ও ছোট মহেশখালী ভিত্তিক চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সাথে চক্রটির ভাল যোগসূত্রতা থাকায় তারা দিনকেদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা এ নিয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাছাড়া এ চক্রের নিকট আত্মীয়রা ভালো মানুষের আড়ালে তাকে দিয়ে লাভজনক এই মাদক ব্যবসা চালানোর কারণে চক্রটির অর্থ যোগানদাতার অভাব নাই।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও বড় মহেশখালী যুবলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান মিন্টু উপরোক্ত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন -এলাকার বৃহৎ স্বার্থ ও মানসম্মান বাঁচাতে চক্রের সদস্য ও অর্থ যোগানদাতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এদিকে মাদক কারবারিদের বিষয়ে শূণ্যনীতি ঘোষণা করেছেন মহেশখালী থানার নবাগত ওসি দিদারুল ফেরদৌস। তিনি বলেন মাদকের সকল আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন লোকজনের সহায়তা কামনা করেছেন। তাছাড়া সর্বশেষ উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সভায় ওসি এ নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চেয়ে সাফ জানিয়ে দেন -মাদক কারবারিদের বিষয়ে কোনো আপস নেই। এ সব বিষয়ে কোনও নেতাকেও তদবির না করার পরামর্শ দেন তিনি।

তাছাড়া ওই সভায় আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম এবং ওসি দিদারুল ফেরদৌস বলেন -মাদক ব্যবসায়ীদের আটকের বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা রয়েছে। তারা মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান জনপ্রতিনিধিদের প্রতি। এর পর শাপলাপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জনপ্রতিনিধিরা অপরাধীদের আটক করে পুলিশে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

[ সংবাদটি সম্পাদনার পর্যায়ে -আরও তথ্য সংযোজন হচ্ছে। ]