বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের চারদিকে ঘোর অন্ধকার। সেখানে পড়ে রয়েছে অজ্ঞাতনামা লাশ। পচা দুর্গন্ধে এগিয়ে আসছে কেউ।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেন লোহাগাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ও কক্সবাজারের মহেশখালীর কুতুবজোমের সন্তান রাশেদুল ইসলাম। দ্রুত, নিজেই ময়লা – দুর্গন্ধযুক্ত কাদা মাটিতে নেমে উদ্ধার করেন অজ্ঞাতনামা লাশ।
১৩ নভেম্বর ( শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপজেলা সদর ইউনিয়নের দয়ার পাড়ার বোয়ারিয়া খালের একটি ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করেন তিনি।
লাশ উদ্ধারের পর ফেইসবুকে তিনি লিখেন, প্রশিক্ষণকালে ওস্তাদরা বলেছিলেন লাশের সেবা করলে কখনো ঠকে না আবার ঠেকেও না। পাশাপাশি সহকর্মী পার্থ হাওলাদারকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে, এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন। পুলিশ কর্মকর্তার এইরকম মানবিকতা দেখে সাধারণ মানুষ মুগ্ধ।
সময়ে সময়ে আলোচনা-সমালোচনায় পুলিশের খারাপ দিকগুলোই বেশি মুখরোচক হয়ে ওঠে। পুলিশ যে জনগণের বন্ধু, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করার পাশাপাশি তারা যে মানবিক কাজের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই তা আমরা ভুলে যাই। দু-একজনের অপকর্মে পুরো পুলিশ বাহিনীকে সমালোচনায় বিদ্ধ করি আমরাই। তবে পুলিশ বিভাগে রয়েছে হাজারো রাশেদুল ইসলাম । যারা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার মতো মানবিক কাজগুলোও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন।
মহামারী কোভিড-১৯ শুরু দিকে লকডাউনের কারণে নিম্নআয়ের মানুষের আয় বন্ধ হয়ে যায়। তখন সারাদেশের মত লোহাগাড়ায় কিছু অসহায় মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন।
এই সময় খোঁজখবর নিয়ে কখনো নিজের অর্থায়নে আবার কখন বিত্তবানদের সহযোগী নিয়ে মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। নিজ নাম্বারে ফোন করার সাথে সাথে খাবার নিয়ে ছুটে যেতেন মানুষের দ্বারে দ্বারে।
লোহাগাড়া থানায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সেবামূলক এবং সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে তরুণদের কাছে রাশেদ ভাই হিসেবে পরিচিত লাভ করেন।
সাধারণ মানুষ মনে করেন রাশেদুল ইসলাম’এর মত সবাই কাজ করলে পুলিশের হারানো ঐতিহ্য আবারো ফিরে পাবে।
সিবিএন//