Advertisement


মহেশখালীতে লকডাউন ও রমজানের খরচে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষ


রকিয়ত উল্লাহ।। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। আর সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। দেশে যে কয়েকটি জেলায় করোনা সংক্রমণ বেশি তার মধ্য অন্যতম কক্সবাজার। আর কক্সবাজারে করোনার সংক্রমণ রোধে চলছে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন।

এদিকে করোনা ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার প্রথমে ১ সপ্তাহের লাকডাউন দিলেও সবকিছু বিবেচনা করে তা আরও ১ সপ্তাহ বৃদ্ধি হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।

আর  লকডাউন এর ধারাবাহিকতায় মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন ও থানার বিশেষ তৎপরতার ভেতর দিয়ে মহেশখালীতেও চলেছে কঠোর লকডাউন।

এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে লকডাউন আরও ১ সপ্তাহ বৃদ্ধি ও রমজান নিয়ে মহেশখালী উপজেলায় চরম সংকটে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, রিকসা, টমটম, সিএনজি চালকসহ নিম্নআয়ের মানুষজন।

সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে ঘরে থাকার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষজনের খাবারের সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার একেবারেই নেই বললেই চলে। রমজান ও লকডাউনে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নআয়ের সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন চরম বিপাকে। এনিয়ে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষ।

উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নের ইউনুসখালীর দিনমজুর লোকমান, লকডাউনের ৫দিন চলে গেলেও কাজ পেয়েছে ২ দিন। তাও আবার আগের একদিনের মজুরি নিয়ে। তিনি বলেন- ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই। তাই কম শ্রমমূল্যে হলেও মজুরির কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু কাজও পাচ্ছি না নিয়মিত।

মাতারবাড়ির সিএনজি চালক রহিম, লকডাউনে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে পরিবারের চালানোর জন্য বের হলেও ভাড়া নেই। একদিনে খরচ বাদ দিয়ে দু'একশ পাওয়া যায়।তা নিয়ে কি সংসার চলে? আবার বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যার দাম ও বেশি।

বড় মহেশখালীর ডেকোরেশনের শ্রমিক কালু জানান -করোনা এবং রমজানে বিয়ে বা অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান না হওয়ায় কর্ম হারিয়ে বেকার।ঘরে বসে থাকলেও খাবার জুটে না। তাই বাধ্য হয়ে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি। আর এখানে ভাড়াও তেমন নেই।

হোয়ানকের কৃষক আমান উল্লাহ জানান, লকডাউনের সুযোগে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করলেও আয় বাড়েনি।  এমন অবস্থায় বাজারে দ্রব্যর স্বাভাবিক মূল্য রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।

রমজান ও লকডাউনের সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরাও  নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি  করে দিলে প্রশাসনের নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকায় অনেকেই ক্ষোভ জানিয়েছেন।

গতবার লকডাউনে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় নিম্নআয়ের মানুষগুলো অনেকটা হাঁফছেড়ে বেঁচেছিল। কিন্তু এবারের লকডাউনে এখনো পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর জীবন কাটছে চরম আতঙ্কে। চরম সংকটময় মুহূর্তে সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষেরা চেয়ে আছেন সরকারি ও বেসরকারি সাহায্যের দিকে।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাফুজুর রহমান বলেন -সরকারি সাহায্য সহযোগিতা আসলে তা নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যই বিতরণ করা হবে। আসলে করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্য বিধি মানা খুবই জরুরি। তাই বাঁচতে হলে ঘরে থাকতে হবে। সরকারে নির্দেশনা মানতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অনেকই জরিমানা ও করা হয়েছে।