Advertisement


মহেশখালীতে কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রধান গেটে দর্শনার্থীদের ভিড়

নতুন পর্যটন কেন্দ্রের পথে মহেশখালী


ফুয়াদ মুহাম্মদ সবুজ।।
নীল সাগরের বুকে এক মনোমুগ্ধকর দ্বীপ মহেশখালী। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য, পাহাড় আর সমুদ্রের মিতালী যেন এখানে মিলেমিশে একাকার। সাম্প্রতিক সময়ে এই দ্বীপে পর্যটনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও তার সংলগ্ন অবকাঠামো। কোহোলিয়া নদীর ওপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সেতু, ঝকঝকে সড়ক আর বিদ্যুৎকেন্দ্রের আধুনিক স্থাপনা দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে। ঈদের ছুটিতে মাতারবাড়ীর বিভিন্ন স্পটে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। সেতুর আলোর ঝলকানি, সমুদ্রবন্দরের প্রশস্ত পথ আর বিদ্যুৎকেন্দ্রের আধুনিক অবকাঠামো দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো মানুষ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আলোয় আলোকিত সেতুর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন দলে দলে পর্যটক।


মহেশখালীতে দীর্ঘদিন ধরে কিছু নির্দিষ্ট পর্যটনকেন্দ্র জনপ্রিয় ছিল, যেমন আদিনাথ মন্দির, পাহাড়ি ঝরনা কিংবা সোনাদিয়ার সৈকত। কিন্তু মাতারবাড়ীর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও সংলগ্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন নতুন করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে কোহোলিয়া নদীর ওপর নির্মিত প্রায় ৮০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি এখন পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। দিনের বেলায় দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতি আর রাতের বেলায় সেতুর ঝলমলে আলোর প্রতিফলনে পুরো এলাকা হয়ে ওঠে মোহনীয়। পাশাপাশি, মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর এলাকার প্রশস্ত সড়ক ও নান্দনিক গোলচত্বরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।


দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসছেন মাতারবাড়ীর এই নতুন পর্যটন এলাকায়। চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, 'এখানকার সেতু ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের সৌন্দর্য অসাধারণ। সন্ধ্যার পর সেতুর আলোর প্রতিফলন যে দৃশ্য তৈরি করে, তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। কক্সবাজার শহর থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী রিনা আক্তার বলেন, 'আমরা অনেক জায়গায় ঘুরেছি, কিন্তু মাতারবাড়ীর মতো এত সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক জায়গা খুব কম দেখেছি।


বড় উৎসব বা ছুটির দিনে পর্যটকদের ঢল নামায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি তৎপরতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি উঠেছে। মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক বলেন, 'ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। তবে জনসমাগম বেশি হওয়ায় আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।


মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও সমুদ্রবন্দর পুরো অঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পর্যটনের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হচ্ছে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা চাইছেন, এখানে আরও বিনোদনমূলক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হোক। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি পর্যটকদের জন্য নৌভ্রমণের ব্যবস্থা, উপযুক্ত নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়, তবে মাতারবাড়ী দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে।