এখন যারা আন্দোলন করছেন, তাঁদের উদ্দেশে একটি প্রশ্ন করতেই হয়- মহেশখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হলে আমাদের সমস্যা কী?
বোরহান উদ্দিন রব্বানী◾
২০১৬ সালে আমি প্রথম মহেশখালী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিবেকের তাড়নায় প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করি। তখন কয়েকজন সিনিয়র বড় ভাই পাশে ছিলেন।
এরপর ২০১৯ সালের দিকে আমরা কয়েকজন কলেজপড়ুয়া তরুণ মিলে এলাকার প্রতিটি পাড়া, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করি। আমরা মানুষের কাছে গিয়ে আমাদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশের আহ্বান জানাই।
কিন্তু মহেশখালীর অনেক ‘সিনিয়র সিটিজেন’ আমাদের সহযোগিতা না করে উল্টো আমাদের হুমকি মনে করতে থাকেন। ফলে আমাদের ওপর নানাভাবে প্রশাসনিক হয়রানি এবং হুমকি আসতে শুরু করে। এমনকি, এ আন্দোলন চালিয়ে গেলে মহেশখালীর এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি সরাসরি আমাদের ‘ক্রসফায়ারে’ দেওয়ার হুমকি দেন।
এভাবে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। সরকারের শক্তির সঙ্গে আমাদের পেরে ওঠা সম্ভব হয়নি, কারণ তখন মহেশখালীর মানুষ ছিল সুবিধাভোগী আর স্বার্থান্ধ। তারা অধিগ্রহণের টাকা কে আগে তুলবে, তা নিয়েই ব্যস্ত ছিল।
ফলে পারিবারিক চাপ ও সামাজিক বিমুখতার কারণে আমরা প্রত্যেকে নিজের কাজে ফিরে যেতে বাধ্য হই।
সেই সময় স্থানীয় জনগণের বড় একটি অংশ সরকারের উদ্যোগের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি জানায়নি, বরং নীরব সমর্থনই ছিল বেশি।
এখন ৯ বছর পর এসে- যখন কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনালের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে এবং বন্দরের কাজও চলমান- তখন যদি সরকার মহেশখালী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করে, তাহলে সমস্যা কোথায়?
উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হলে অন্তত একটি পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা তৈরি হবে। সড়ক, বাজার, হাসপাতাল, স্কুল, ড্রেনেজ, বিদ্যুৎ- সব কিছু নিয়ম মেনে গড়ে উঠবে। এমনকি আশপাশের জমির মূল্যও বেড়ে যাবে, যার সরাসরি উপকার পাবে স্থানীয় মানুষ।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়-এখন যারা কথিত আন্দোলনের নামে নিজেদের সেলিব্রেটি বানানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্যটা কী?