Advertisement


মহেশখালীতে সাইকেল চালিয়ে আতর বিক্রি করা প্রবীণ নুরুল আবছারের মৃত্যু, বিকেলে জানাজা


নিজস্ব প্রতিবেদক।। বড় মহেশখালীর লাতুয়ার ডেইল এলাকার বাসিন্দা সবার পরিচিত প্রবীণ মুরব্বি নুরুল আবছার আর নেই, আজ সকালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ( ইন্না-লিল্লাহে ওয়িন্নাইলাইহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৭০ বছর।

জানা গেছে, আজ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে লাতুয়ার ডেইল এর বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বয়সজনিত অসুস্থতায় ভোগছিলেন। 

আজ বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে নিকটবর্তী মধুয়ারডেইল কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। 

তার পূর্ব নিবাস কুতুবজোম ইউনিয়নের খোন্দকার পাড়া গ্রামে। দীর্ঘদিন আগ থেকে তিনি লাতুয়ার ডেইল এলাকায় বসবাস শুরু করেন। ◾

তার মৃত্যুর খবর দিয়ে মুহাম্মদ রবিউল হোসাইন নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন- 

❝ মহেশখালীতে দীর্ঘদিন ধরে সাইকেল চালিয়ে যিনি আতরের ব্যবসা করেছেন, মানুষের মাঝে আতরের সুগন্ধি ছড়াতেন, কাউকেও তাঁর কাছ থেকে আতর কেনার জন্য বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোন রকম উদ্বুদ্ধ না করে বরং একটু আতর লাগিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে যেতেন - সকলের পরিচিত সেই আতর ব্যবসায়ী বড় মহেশখালী ইউনিয়নের লাতুয়ারডেইল এলাকার অধিবাসী জনাব নুরুল আবছার সাহেবের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। আল্লাহ্ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুক। ❞

ছৈয়দুল করিম নামের অপর একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন-

❝ বয়সের ভারে ন্যুজ কিন্তু মানসিক শক্তিতে বলীয়ান সমাজের প্রবীণ ব্যক্তি জনাব নুরুল আবছার সত্তোর্ধ্ব বয়সে সাইকেল চালিয়ে মহেশখালীর আনাচে–কানাচে সুগন্ধি বিতরণ করতেন। গোরাকঘাটা বাজারে তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎ হয়েছে। সাক্ষাতে তিনি সুমিষ্ট ব্যবহারসহ জামা কিংবা হাতে আতর লাগিয়ে দিতেন। উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মধ্যে আতরের সুগন্ধ ছড়িয়ে দেওয়া এবং একই সঙ্গে আতর বিক্রি করা। এটিই ছিল তাঁর রোজকার পেশা।

এই বৃদ্ধ মুরব্বিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। আজ নতুন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল হোসেন ভাইয়ের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম, মুরব্বির বাড়ি বড় মহেশখালী ইউনিয়নের লাতুয়ার ডেইলে। আরও জানতে পারলাম, আজ তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

এ ধরনের মানুষই এখনো সমাজব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে হালাল রুজি–রোজগার ও আত্মনির্ভরশীলতার শক্তি। তাঁরা পবিত্র ব্যবসার প্রতীক। ব্যবসাকে শুধু মূলধনের হিসাব দিয়ে নয়, সততা ও একাগ্রতার হিসাব দিয়ে মূল্যায়ন করা উচিত। ফটকা কারবারিদের এই যুগে তাঁর মতো লোভহীন ব্যবসায়ী কয়জন আছেন? তাঁরাই ছিলেন সাদা মনের মানুষ।

তাঁর মৃত্যুতে হয়তো ফেসবুকে মহেশখালীজুড়ে শোক জানিয়ে ঢেউ উঠবে না। কিন্তু তাঁর মতো মানুষ কি বর্তমান সময়ে আর পাওয়া যাবে? শেখ সাদি তো বহু আগেই প্রমাণ করে গেছেন এই সমাজ পোশাক ও অর্থের মূল্যায়ন করে, বিদ্যা, সততা ও ন্যায়পরায়ণতার নয়।

আল্লাহ তাআলা তাঁকে জান্নাতের সুশীতল ছায়াতলে স্থান দান করুন। আমিন। ❞