কুতুবদিয়া ঘুরে এসে 🔴 বাতাসের সাথে ঘুরছে পাকা। আর এতে তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ। কুতুবদিয়ার বাড়িঘরে জ্বলছে বাতি। এই যেন এক নতুন আনন্দ দ্বীপবাসীর কাছে। গেল বছরের দ্বীপ উপজেলায় বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প উদ্বোধনের পর সর্বসাধারনের ঘরে ঘরে সংযোগ চালু হয় এই বিদ্যুতের। তবে এর আগে ২০০৮ সালে আরো একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে সরকার।
তবে বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি নির্মিত এই বাযু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থায়ীত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকেই। যদিওবা এই কেন্দ্রটি ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানালেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানায়, ২০১৬ সালে সড়কের পাঁশঘেষে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় ২০ টারবাইনের বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বর্তমানে এই কেন্দ্র থেকে দিনে একটানা ছয় থেকে আট ঘন্টা বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে এলাকার সাড়ে ৭শ পরিবার। উপকুলীয় এলকায় প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার লক্ষে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো চালু করা হয় বাযু বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় এক মেগাওয়ার্ড ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হওয়ার ৯ বছরের মধ্যে একাধিকবার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়লে তা বিকল হয়ে যায়। বারবার সংস্কার আর পুননির্মানে সরকারের ব্যয় হয় অনেক টাকা। তারপরও এই ধরনের প্রকল্প থেকে পিচপা হয়নি সরকার। ২০১৭ সালে নতুন ২৩ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা ব্যয় করে আরো একটি ১ মেগাওয়ার্ড ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করেছে সরকার। আর এতে বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে দ্বীপ এলাকার মানুষ।
কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ এলাকার লবন ব্যবসায়ী আব্দুল হক বলেন, আগে আমরা কুপি বাতির আলো জ্বালাতাম। কেরোসিন খরচ হতো অনেক। এখন বায়ুবিদ্যুৎ পাওয়ায় আমরা এখন অনেক খুশি। আর বেশি সময় অন্ধকারে থাকতে হবে না এবং কেরোসিন লাগবে না।
চিংড়ি ব্যবসায়ী ছৈয়দ করিম বলেন, কুতুবদিয়ায় বায়ুবিদ্যুৎ চালু হওয়ায় আমাদের আর অন্ধকারে থাকতে হবে না। এখনও প্রত্যেকের বাড়িতে বিদ্যুৎ যায়নি, প্রতিটি ঘরে ঘরে বায়ুবিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
কুতুবদিয়া বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র আবাসিক প্রকৌশলী সাজ্জাদ ছিদ্দীকি বলেন, বর্তমানে আমরা দ্বীপের সাড়ে ৭শ পরিবারকে বায়ুবিদ্যুরে আওতায় এনেছি। আসতে আসতে দ্বীপের সব বাসিন্দাকে বায়ুবিদ্যুতের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়াম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, বর্তমানে যে ১ মেগাওয়ার্ড় বায়ুবিদ্যু প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে তা ঘূর্ণিঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসে কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পরিক্ষামূলক চালু হওয়া এই প্রকল্প সফল হলে দেশের প্রত্যেক উপকূলীয় এলাকার এই ধরনের বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে সরকার।
বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, কুতুবদিয়া বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি আমাদের পরিক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। তবে প্রকল্পের পুরা ম্যাপ এর জন্য অপেক্ষা করছি। পুরা ম্যাপ পেয়ে গেলে আরো বড় বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করব। এটা করার কারণ হল উপকূলীয় এলাকার মানুষদের বায়ুবিদ্যুতের মাধ্যমে প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া।