Advertisement


করোনা: সচেতনতা কতদূর ?

অসীম দাশ গুপ্ত।।
ঘড়িতে সন্ধ্যা ৭টা তখন। হোয়নকের ঐতিহ্যবাহী প্রধান বাজার টাইমবাজারে গেলাম। উদ্দ্যেশ্য মাছ কিনবো। কিন্তু বাজারে পৌছেই কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ হলাম। মাছের হাট ঘিরে জনতার দীর্ঘ ভীড় দেখে কিছুক্ষণ দুর থেকেই তাকিয়ে রইলাম। খানিকক্ষণ হারিয়ে গেলাম সেই স্কুলবেলায়। স্কুলবেলায় যখন ক্লাসে চেছাঁমেচি করতাম তখন স্যারেরা তিরস্কার করতো এই বলে যে, মাছবাজার পেয়েছো নাকি এটা?
কিন্তুু কল্পনা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। মাছ বাজার মানেই তো ব্যপক জনসমাগম থাকবেই। হৈ চৈ না থাকলে সেটি আবার কীসের মাছ বাজার!! কল্পিত জগত থেকে বের হয়ে এবার বাস্তবতায় ফিরলাম।
বিশ্বে করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। চিকিৎসক, গবেষক, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সবকিছুই যেন নিরপায়! মাত্র এক মাসের ব্যবধানে গোটা বিশ্ব স্থম্ভিত! ভেঙে পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতি। চীন, ইতালি, জার্মানি, কানাডা, স্পেনের মতো উন্নত দেশ আজ রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে এ ভাইরাস মোকাবিলায়।
তবে বিশ্ব ব্যাপি ছড়ানো করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে নিজেদের বাঁচাতে এখনো খুব একটা সচেতন বলে মনে হয়নি হোয়ানকের লোকজনকে। সাবধানতাও অবলম্বন করেনি ইউনিয়নটির বেশির ভাগ মানুষ। করোনার ভয়াবহতা নিয়ে খুব একটা উদ্বেগও দেখা যাচ্ছে না তাদের মাঝে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যদিও বার বার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সংক্রমণ টেকাতে বাইরে হওয়ার সময় মুখে মাস্ক পড়তে।  কিন্তু এ এলাকার অধিকাংশ লোকজন এখনো ভয়ডরহীন স্বাভাবিক জীবন পার করছে। মাছ বাজারে দেখা জনসমাগমের অধিকাংশের মুখে মাস্ক না থাকার বিষয়টি যেমন আমাকে অবাক করেছে, তেমনি অসচেতন চলন উদ্বেগেরও সৃষ্টি করেছে মনে।
ইউনিয়নটির অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত হলেও শিক্ষিত যে একেবারেই নেই তা কিন্তু নয়। হযতো অশিক্ষিত-শিক্ষিত কেউই সচেতনতা গড়ে তুলছে না নিজের মধ্যে। সরকারের পক্ষ থেকেও বার বার বলা হচ্ছে যেকোন জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য। সরকারের এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনও। তবুও সচেতনতাবোধ কেন এখনো আসেনি? এই প্রশ্ন বরাবরই উত্তরহীন থাকলো।
উপরের চিত্রটি শুধুমাত্র বাজারটির একটা অংশের। তবে এ চিত্র হয়তো পুরো বাজারজুড়ে রয়েছে। কিংবা আরও অনেক বাজারেরই গতানুগতিক চিত্র হয়তো এটি। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে। ছোঁয়াচে রোগ বলে এ রোগ যে কাউকে সংক্রমিত করতেপারে। অতএব মুষ্টিমেয় শিক্ষিত লোকজন সচেতন করা মানেই করোনা প্রতিরোধ হবে এমনটা ভাবা বোকামি। তাই গ্রাম পর্যায়েও করোনা সম্পর্কে সচেতনতা করা অত্যন্ত জরুরি এই মুহুর্তে। আর এ কাজে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার তরুণ সমাজই পারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে। মনে রাখতে হবে সকলকে, আপনার সচেতনতা মানেই পাশেরজনের নিরাপত্তা।