Advertisement


দেড় যুগ ধরে স্বেচ্ছায় পাঠদান মহেশখালীর যে স্কুলে !

অসীম দাশ।।

দক্ষিণ পুটিবিলার দাসিমাঝি পাড়া মহেশখালীর অনগ্রসর এলাকা গুলোর একটি; যার নাম শুনলেই একসময় আতকে উঠতেন অনেকেই। যেখানে নিত্য বসতো মাদকের আখড়া, ঘটতো চুরি-ডাকাতির ঘটনাও। ঠিক এমন একটি অনগ্রসর এলাকায়ও যে শিক্ষার আলো ছড়ানো যায় তার অনন্য উদাহারণ তৈরি করেছে স্থানীয় যুবক আবুল বশর পারভেজ। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিত্যক্ত ভবনকে তিনি গড়ে তুলেছেন আজকের দক্ষিণ পুটিবিলা প্রিজম বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

উনিশের দশকে দক্ষিণ পুটিবিলায় ৩৯ শতক জমির উপর ৩য় তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে অফিস কার্যক্রম চলত বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা প্রিজমের। একসময় নানা বাস্তবতায় বেসরকারি এনজিওটি মহেশখালী ছাড়লে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে ভবনটি। অযত্নে নষ্ট হতে থাকে ভবনটির দরজা-জানালা-বৈদ্যুতিক লাইনও। সেসময় স্থানীয় যুবক পারভেজের প্রচেষ্টায় সেই ভবনে গড়ে উঠে দক্ষিণ পুটিবিলা প্রিজম বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে ২০১৫ সালে তৎকালীন ইউএনও আনোয়ারেল নাসের’র উদ্যোগে এনজিও প্রিজম তাদের জমিটি স্কুলের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে দেয়। পরবর্তীতে নানা কারণে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয় স্কুলটির নাম। 
স্থানীয় ২ শিক্ষিত মহিলার স্বেচ্ছাশ্রমে ও স্থানীয়দের চাদাঁয় বই কিনে স্কুলটি চালিয়ে নিয়ে যান মি. পারভেজ। শুরু থেকেই স্কুলটির পথচলা যাতে না থামে সে চেষ্টায় পারভেজ ঘুরেছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে। ধর্না দিয়েছেন বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাছেও। কখনো সাহায্যে মেলেছে কখনওবা ফিরেছেন তিনি শুন্যে হাতে।
বর্তমান স্কুলটিতে পড়াশোনা করছে শিশু থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ২৫৭জন  শিক্ষার্থী। আর এসব শিক্ষার্থীদের প্রায় দেড় যুগ ধরে স্বেচ্ছায় পাঠদান দিয়ে আসছেন খুরশিদা বেগম, কামরুন নাহার, সেলিনা আকতার, সুলতানা বিলকিস, শাকের মাহামুদ নামের ৫ মানবিক শিক্ষক। 
আবুল বশর পারভেজ জানিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে স্কুলটিতে সহযোগিতা করে গিয়েছেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। স্কুল চালু রাখতে পাশে দাড়িয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: শরীফ বাদশাসহ আরও অনেকে।
মি.পারভেজ প্রতিবেদককে আরও বলেন,“ স্কুলটির বইপত্রসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খরচ এ যাবত নানা প্রতিষ্টান ও ব্যক্তির প্রত্যক্ষ অনুদানে চলে আসছিল। কিন্তু বছরের পর বছর প্রায় বেতনহীন স্বেচ্ছাশ্রমে পাঠদান দিয়ে আসছে শিক্ষকরা। তাই আমি সরকারের কাছে স্কুলটি সরকারিকরণের জোড় দাবী জানাই।”
স্কুলটির সভাপতি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: জামিরুল ইসলাম মুঠোফোনে মহেশখালীর সব খবর’কে জানান,“ স্কুলটির আমরা সংস্কার করেছি। বর্তমানে সরকারীকরণ প্রক্রিয়াটি বন্ধ রয়েছে। যখনই এটা চালু হবে সরকারীকরণের চেষ্টা করা হবে”।