Advertisement


মহেশখালীতে পুলিশের তড়িত অভিযান -শিশু উদ্ধার, অপহরণকারী গ্রেফতার


ফরিদুল আলম দেওয়ান।।
 
মহেশখালীতে মুক্তিপণের দাবিতে  রোহিঙ্গা নাগরিক আপন খালু কর্তৃক ৪ বছরের এক শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ। এমন অভিযোগে মহেশখালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রামু থেকে উদ্ধার করেছে ৪ বছরের শিশু সাইমনকে। একই সাথে গ্রেফতার করেছে অপহরণকারী রোহিঙ্গা নাগরিক কথিত ফুফা মোহাম্মদ রফিককে। আপন ফুফা কর্তৃক শিশু অপহরণের এ ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে নেমে ঘটনার সাথে মাদকদ্রব্য তথা ইয়াবা বিক্রির যোগসূত্র রয়েছে মর্মে ইঙ্গিত পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নে।  

     
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মহেশখালী সার্কেলে নিয়োজিত নবাগত সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন এর কায়দাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ করিম তার ৪ বছরের এক শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এবং চার লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করছে মর্মে থানায় অভিযোগ করেন। এমন স্পর্শকাতর' শিশু অপহরণের বিষয়টি আমলে নিয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে মহেশখালীতে নাই সদ্য যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাই এর নেতৃত্বে তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে নেমে অপহরণকারীর মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারীর অবস্থান নির্ণয় করি। এসময় অপহরণকারীর অবস্থান রামু থানা এলাকায় পেয়ে থানার এসআই আলামিন সরকার ও এসআই বাপি সরকারের সমন্বয়ে একদল পুলিশ নিয়ে অভিযানে নেমে রামু থানার গর্জনিয়া ইউনিয়ন এর বড় জামছড়ি গ্রামের জনৈক তুষারের বাড়ি হতে অপহৃত শিশু সায়মন (৪)কে উদ্ধার করি। এ সময় অপহরণকারী শিশুর ফুফা রোহিঙ্গা নাগরিক উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শিবিরের লম্বাশিয়া এলাকার সুলতান আহমদ এর পুত্র মোহাম্মদ রফিক (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে অপহরণকারী রফিক শিশুটির পিতার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করলে পুলিশ বিষয়টি কৌশলে আমলে নিয়ে শিশুর পিতার মাধ্যমে বিকাশে ৫ হাজার টাকা দিয়ে অপহরণকারীর অবস্থান নির্ণয় করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী রফিক অপহরণের বিষয়ে স্বীকার করে জানান শিশুর পিতা তার স্ত্রীর বড় ভাই মোহাম্মদ করিমের নিকট থেকে পাওনা কিছু টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে সেই শিশুটিকে অপহরণ করেছিল। অপরদিকে শিশুর পিতা মোহাম্মদ করিম জানান, অপহরণকারী মোহাম্মদ রফিক একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। সে কৌশলে তার বোন সানোয়ারা বেগমকে বিয়ে করে। তার নিকট থেকে সে কোন টাকা পাওনা নাই তবে তার ছোট ভাইয়ের নিকট থেকে কিছু টাকা পাওনা আছে বলে স্বীকার করেন।

অপরদিকে অপহরণকারীকে গ্রেফতার অভিযানে নামা মহেশখালী থানার এসআই আল আমিন সরকার জানান, অপহরণকারী রফিক একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। সে একেকবার একেক ঠিকানার অধিবাসী বলে জানায়। সে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে থাকলেও রামু থানার গর্জনিয়া ইউনিয়ন এর এলাকায়ও সে বসবাস করে। এলাকাবাসীরা জানান সে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করে মাদক ব্যবসা তথা ইয়াবা চোরাচালানে জড়িত। মহেশখালীর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে ইয়াবা ব্যবসার টাকার লেনদেন সংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবে চার বছরের শিশুকে অপহরণ করেছিল বলে পুলিশ জানান।