Advertisement


সেতুর দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি


মহেশখালী-কক্সবাজার সংযোগ সেতুর দাবীতে এবার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি খোলা চিঠি লিখেছে ইয়ামিন শাহরিয়ার নামে মহেশখালীর এক শিক্ষার্থী। আজ Yamin Shahriar - Teller  নামে তার একটি ফেসবুক পেজে এই চিঠি প্রকাশ করেন তিনি। চিঠিটি মহেশখালীর সব খবরের পাঠকদের জন্য হুবুহু প্রকাশ করা হলো:

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। 

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ ‘মহেশখালী’ সম্পর্কে আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন। এই দ্বীপকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে ২০১৭সালের ২৭এপ্রিল মাননীয় মন্ত্রী জুনাইয়েদ আহমেদ পলক স্যারের উপস্থিততে ভিডিও কনফারেন্স'র মাধ্যমে “ডিজিটাল আইল্যান্ড” হিসাবে ঘোষণা করছিলেন। এছাড়াও বর্তমান বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রকল্পগুলোর মধ্যে বেশ ক'টি মহেশখালীতে হচ্ছে (যেমন, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলএনজি গ্যাস টার্মিনাল, সমুদ্র বন্দর, কয়লা লোড-আনলোড জেটিসহ নানান প্রকল্প)। আমরা মহেশখালী বাসী বাংলাদেশের স্বার্থে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা না ভেবে নিজেদের একমাত্র সহায়সম্পদ পানের বরজ, লবণের মাঠ, বড় বড় মাছের প্রজেক্ট ইত্যাদি উৎসর্গ করেছি।

কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান মহেশখালীর প্রায় সাড়ে ৩লক্ষ জনগণের একটাই প্রত্যাশা মহেশখালী-কক্সবাজার ‘সেতু’। এই নৌপথ মহেশখালীবাসী ও আগত পর্যটকদের জন্য পুলসিরাতে রূপ নিলো। গত মাসের ২০তারিখে চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যয়নরত তরুণ মেধাবী ছাত্র তোফাইলকে হারাতে হলো এই নৌপথে। এর আগে ২০১৮ সালের ১৩জানুয়ারি সহজ-সরল ছেলে ড্রাইভার আনিসকে বিসর্জন দিতে হলো। এমনকি বর্তমান কক্সবাজার-২ আসনের মাননীয় এমপি জনাব আশেক উল্লাহ রফিকের পিতা মরহুম রফিক উল্লাহ'র মৃত্যু হলো মহেশখালী-কক্সবাজার নৌ-দুর্ঘটনায়। এভাবে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় শিকার হওয়া অনেকের লাশ পাওয়া গেলো আশেপাশের প্যারাবন ও সোনাদিয়া চরে। এছাড়াও, যাত্রী ও মুমূর্ষু রোগি পারাপারে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাহলে কি আমরা কক্সবাজার মহেশখালীবাসী একটা ‘সেতু’ আশা করতে পারিনা?

বিশ্বাস করুন মহেশখালীর মানুষ আজ বিমর্ষ, ভারাক্রান্ত ও ক্ষোভে জর্জরিত। প্রতিনিয়ত মানববন্ধন, প্রতীকী লাশ নিয়ে মৌন মিছিল, পত্রপত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়াসহ সবজায়গায় দাবি একটাই, ‘মহেশখালী-কক্সবাজার সেতু চাই’। আর কোন মায়ের বুক খালি করতে চাইনা। পড়ালেখার জন্য মহেশখালী থেকে বোটে উঠলে আমাদের মা-বাবা চরম দুশ্চিন্তায় থাকে এই পুলসিরাত তথা নৌপথ পার হয়ে কক্সবাজার পৌঁছাতে পারছি কিনা। ফোনের পর ফোন করতে থাকে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার দ্বারা বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস আপনি দ্রুত সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে মহেশখালীবাসীকে রক্ষা করবেন। এর আগে ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয় থেকে জরিপের জন্য আসলেও তা ধীরগতি হয়ে পড়ে। কোন সোরাহা হয়নি। এই ‘সেতু’ হলে, উন্নয়নশীল বাংলাদেশ ও অর্থনীতিকে আরো তরান্বিত করবে। সম্ভাবনাময় দ্বীপ মহেশখালীতে হওয়া প্রকল্পগুলোতে দারুণ ভূমিকা রাখবে। সর্বোপরি, দেশি-বিদেশী পর্যটক এর আনাগোনা বৃদ্ধি পাবে।
সুতরাং, আপনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ও ভালোবাসায় দ্রুত ‘সেতু' বাস্তবায়নের মাধ্যমে হয়তো আমরা মুক্তি পাবো। আর কোন মা-বাবার বুক খালি হবেনা। আপনার সদয় দৃষ্টি আশা করছি..

ইয়ামিন শাহরিয়ার
এইচএসসি পরীক্ষার্থী-২০
মহেশখালী, কক্সবাজার।