Advertisement


মহেশখালীবাসী কী চায় ? কেন চায় ?


বিশেষ প্রতিবেদন।।

মহেশখালী ‍বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবেও খ্যাত। মহেশখালী আরও তিনটি ছোট ছোট দ্বীপপের সমন্বয়ে গঠিত। এর পূর্বে চকরিয়া উপজেলা, দক্ষিণ পূর্বে কক্সবাজার সদর, দক্ষিণ পশ্চিমে সুনীল বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর পশ্চিমে কুতুবদিয়া উপজেলা।

লবণ ও পান ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র এই মহেশখালীরও রয়েছে কিছু দু:খ গাঁথা। কী কী অপূর্ণতা আছে এই মহেশখালীর? কী কী থাকা উচিত ছিলো, কিন্তু নেই! - এমনই প্রশ্ন করা হয়েছিল মহেশখালীবাসীদের। তাদের জবাবে উঠে এসেছে নানা চাওয়া। সেই চাওয়া নিয়েই এই প্রতিবেদন। প্রশ্নটি করেছিলেন মহেশখালীর সব খবরের সহ-সম্পাদক, তরুণ সংগঠক অসীম দাশ

প্রশ্নের জবাবে কারা কি বললো? দেখুন :

কক্সবাজার নিউজের বার্তা সম্পাদক ইমাম খাইর লিখেছেন,“অনেক অপূর্ণতা রয়ে গেছে। পরিপূর্ণ হয়েছে কেবল দুর্নীতি, লুটপাট।

মহেশখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও মহেশখালীর সব খবরের সম্পাদক মাহবুব রোকন লিখেছেন,- সিনেমা হল। সেন্ট্রাল খেলার মাঠ। শিশুপার্ক। পরিকল্পিত পর্যটন স্পট। ক্যাবল কার। যোগ্যতম আবাসিক হোটেল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শর্মী দে এর প্রত্যাশা- মানসম্মত কুরিয়ার সেবা।

বেসরকারি এনজিও কর্মী আজিজ সিকদার চেয়েছেন, মহেশখালী টু কক্সবাজার সেতু, বিনোদনের জন্য পার্ক, টেকনিক্যাল স্কুল কলেজ, উপজেলা সদরে বনফুল/ফুলকলির মতো ভালো নাস্তার দোকান, মহেশখালী কক্সবাজার পারাপারের জন্য ভালোমানের বড় স্পীডবোট।

আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা আনোয়ার চৌধুরি’র প্রত্যাশা-  হাসপাতালে আইসিইউ, নৌ এম্বুলেন্স, নৌ পারাপারের জন্য লঞ্চ, নেতাদের মহেশখালীর প্রতি ভালোবাসা এবং মহেশখালী-কক্সবাজার সংযোগ সেতু।

মহেশখালীর সন্তান বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চেয়েছেন, দু'প্রান্তে দু'টি টার্মিনাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জন্য দু'টি এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরী রোগী পরিবহনের জন্য গোরকঘাটা এবং বদরখালী ঘাটে দু'টি দ্রুতগামী ওয়াটার বাস, সরকারী একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দু'প্রান্তে দু'টি গণ-গ্রন্থাগার, মানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীন একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পট (শিশু পার্ক ও পর্যটন কর্পোরেশনের আবাসিক হোটেলসহ), কেন্দ্রীয় স্টেডিয়াম, ট্যুরিস্ট পুলিশ।

শাপলাপুর কায়কাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রবিউল হোসাইন বলেছেন, আমাদের মহেশখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসে মোট পদ আছে ৮/৯ টি। কিন্তু কর্মরত আছেন মাত্র ২ জন। একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী দিয়ে ডিজিটাল আইল্যান্ডের পুরো প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে। 

মহেশখালী পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিপ্পন পাল চেয়েছেন, একটা উন্নত মানের হাসপাতাল, যে হাসপাতালে বড় বড় সিজার সহ সব চিকিৎসা করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুবল দে বলেছেন, ভালো মানের হোটেল নাই, সেন্ট্রাল একটা স্টেডিয়াম, মহেশখালীর ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার জন্য একটা সংরক্ষণ শালা।

মহেশখালী কলেজের ছাত্র শাহ জাহান আরিফ চেয়েছেন, যুব উদ্যোক্তা তৈরীর ট্রেইনিং সেন্টার।

মহেশখালী শুভসংঘ’র শুভার্থী মো: সোহেল চেয়েছেন, মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্লাড ব্যাংক, আদিনাথ জেটিতে পুলিশ বক্স অথবা পুলিশ সেবা কেন্দ্র, মহেশখালী জেটির ভোগান্তি দূর করার জন্য অভিজ্ঞ চালক পর্যাপ্ত।

শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দীন ইলাহী বলেছেন, মহেশখালীতে প্রধানত টুরিজম বোর্ড থাকা উচিত যারা পর্যটন স্পট গুলোর দেখভাল করবেন, এবং নতুন সম্ভাবনা গুলো নিয়ে কাজ করবেন। থাকা উচিত অত্যাধুনিক হাসপাতাল। যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সমৃদ্ধ করা উচিত ।কক্সবাজার থেকে সোনাদিয়া বা মহেশখালী যাওয়ার ভিন্ন পথ অতিদ্রুত করে ফেলা উচিত । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা উচিত বাংলা ইংলিশ এবং সে মানের শিক্ষক ও তাদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো উচিত। বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য আরো বেশি উন্মুক্ত করা এবং তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য স্পেশাল পুলিশ রাখা উচিত। নেভাল একাডেমি করা খুবই জরুরি । পরিকল্পিত বাসস্থান করলেই তবে কৃষক, ব্যবসা, সমুদ্র, আবাদি, পাহাড়ি জমি, জীববৈচিত্র সকল কিছু সুন্দরভাবে বাঁচবে। পরিকল্পিত বাসস্থান ও নগরায়ন না করলে মহেশখালী জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মম শিকার হবে।

শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মুহাম্মদ ইয়ামিন বলেছেন, ঘোষিত ডিজিটাল আইল্যান্ড ও তা বাস্তবায়নে টেকসই পরিকল্পনা। দর্শনীয় স্থান (শিশু পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র, সুইমিংপুল, রাত্রিযাপনের ভালো মানের হোটেল ইত্যাদি)।  হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য / প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ/জাদুঘর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদারকি ও ঘাটতি পূরণ। রাস্তাঘাট সংস্কার ও তার উভয় পাশে পরিকল্পিত ডাস্টবিন, সবুজায়ন এবং স্টেশন। দক্ষ ও স্বনির্ভর জনবল তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মশালা, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

আরিফুল ইসলাম টিপু’র লিখেছেন, আমরা মহেশখালী বাসীর একটা দাবী পদ্মা সেতুর মত একটি সেতু দেখতে চাই।

মহেশখালীর এমন অসংখ্য অপূর্ণতা নিয়ে আফসোস আর হাহাকার এই দ্বীপবাসীর বহুদিনের। এইসব আকাঙ্খা আর দাবি বাস্তবায়নে নেই কার্যকর কোন পদক্ষেপ। তবুও মহেশখালীবাসীর এইসব ছোট ছোট স্বপ্নগুলো একদিন ডানা মেলবেই, এমন প্রত্যাশা আমাদেরও।

///অসীম দাশ//