রকিয়ত উল্লাহ।
কক্সবাজার উপকূলে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে জলদস্যুরা। বিগত ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর থেকে গত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় বাঁশখালী, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপকূলের চিহ্নিত ২ শতাধিক জলদস্যু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। এরপর থেকেই অনেকটা শান্ত ও নিরাপদ ছিল উপকূলের জেলেরা। কিন্তু মাছ ধরার এ ভরা মৌসুমে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে জলদস্যুরা।
সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁশখালী কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপকূলের প্রায় ২০টি মাছ ধরার ট্রলারে গণডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। দস্যুরা এসব ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের মারধর করে মাছ, ডিজেল, জাল ও মেশিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশসহ যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা। লুটপাটের পর বোটসহ মাঝি-মাল্লাদের জিম্মি করে আবার আদায় করা হয়েছে মুক্তিপণ। পণের টাকা দিতে গড়িমসি করায় বাঁশখালী উপকূলের এক মাঝিকে গুম করা হয়েছে। ডাকাতিকৃত এসব বোটের মাঝে কুতুবদিয়ার আব্বাস কোম্পানীর মালিকানাধীন “এফ.বি আল্লাহ মালিক” ইউনুস কোম্পানীর মালিকানাধীন “এফ.বি মায়ের দোয়া” শামসুল আলমের মালিকানাধীন “এফ.বি আল্লাহর দান” রয়েছে বলে জানা গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরে নির্বিচারে গণডাকাতি হচ্ছে। পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করে জলদস্যুরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনিকে এ সব জলদস্যুদের নজরদারির আওতায় আনার অনুরোধ করেন জেলেরা।
এফ.বি মায়ের দোয়া ট্রলারের মালিক বড়ঘোপ বহদ্দার পাড়ার ইউনুস জানান, মালামাল লুটে নেয়ার পরও ডাকাতের দেয়া ০১৮১৮৩১৬৪৮৭ নম্বরে ৩০হাজার টাকা বিকাশ করে মাঝিমাল্লাসহ ও ট্রলার ১৬ঘন্টা পরে জিম্মি দশা থেকে ছাড়িয়ে এনেছি।
কুতুবদিয়া দ্বীপের আব্বাস কোম্পানী বলেন, জলদস্যুরা তিন ব্যারেল ডিজেল, ব্যাটারীসহ মেশিনের মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তাদের দাবীকৃত মুক্তিপণের টাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে জিম্মিদশা থেকে মাঝি-মাল্লাসহ বোট উদ্ধার করতে হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
কুতুবদিয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, বিগত এক দেড় বছর ধরে সাগরে ফিশিং ট্রলার ডাকাতি হয়নি। পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে উপকূলের তালিকাভূক্ত জলদস্যুদের আটক ও আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দেয়ায় জেলেরা সাগরে নিরাপদে মাছ ধরতে পেরেছে । কিন্তু ইদানিং জলদস্যুরা আবারো দলবদ্ধ হয়ে সাগরে ডাকাতি কাজে নেমে পড়েছে। উপক‚লে র্যা ব, পুলিশ, সাগরে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর টহল জোরদার করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.জালাল উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমরা এখনো অভিযোগ পাইনি। যদি অভিযোগ পাই তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।