Advertisement


মিথ্যা ভাবে আসামিঃ মহেশখালী জাগ্রত ছাত্রসমাজের লিখিত বক্তব্য (ভিডিও)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় মহেশখালীর দেশপ্রেমিক সচেতন সাংবাদিক সমাজ, আসসালামু আলাইকুম। আমি ফজলে আজিম মোহাম্মদ ছিবগতুল্লাহ্, আহ্বায়ক ও মুখপাত্র, মহেশখালী জাগ্রত ছাত্রসমাজ। আজ অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনারা জানেন, গত তেসরা এপ্রিল, শনিবার রাতে হেফাজতে ইসলামের কিছু উগ্র সমর্থক তান্ডব চালিয়েছে মহেশখালী জুড়ে। তাদের হামলা থেকে বাদ যায়নি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, আওয়ামীলীগের কার্যালয়, সাধারণ মানুষ ও সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট কিছুই। রাতের আঁধারে অতর্কিত এই তান্ডবে হতবাক হয়ে পড়েছিলো পুরো দ্বীপাঞ্চলের শান্তিপ্রিয় জনগণ।


স্বাভাবিকভাবেই সবমহল থেকে এই তান্ডবকারীদের বিরুদ্ধে মামলার জোরালো দাবি উঠেছিলো। ফলশ্রুতিতে, মহেশখালী থানা পুলিশ বাদী হয়ে প্রায় ৯০০ জনের নামে ৩টি মামলা দায়ের করে। কিন্তু সেই মামলায় আসামির তালিকা দেখে আমরা সত্যিই অবাক না হয়ে পারিনি।

হাস্যকর হলেও সত্য, উক্ত ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় অন্যতম আসামী করা হয়েছে মহেশখালীর মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার প্ল্যাটফর্ম মহেশখালী জাগ্রত ছাত্রসমাজের দুজন সক্রিয় কর্মী এবং দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সরব সবার পরিচিতমুখ Riaz Mahmud ভাই (৭নং আসামী) ও Riduan Mostafa ভাইকে (১০ নং আসামী)। অথচ তারা সেদিজ ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। ছিলেন চট্টগ্রাম শহরে। যখন মহেশখালীতে হেফাজতের সমর্থকেরা তাণ্ডব চালাচ্ছিল, তখন  এরা দুজন টিউশন শেষ করে নগরীর শোলকবহরে এক বন্ধুর বাসায় ফিরছিলেন। এখন আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, ঘটনার দিন রাতে চট্টগ্রামে অবস্থানরত এই দুইজন মানুষ কিভাবে একইসময়ে মহেশখালীতে ঘটে যাওয়া তান্ডবে অংশ নিবে? ইতোমধ্যে আপনারা ফেসবুকে হয়তো একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ দেখতে পেয়েছেন, যেখান থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, উক্ত হামলায় তারা অংশ নেননি। ভিডিওতে তারিখ ও সময় উল্লেখ আছে। চাইলে মিলিয়ে নিতে পারেন। এইরকম আরো কয়েকটা ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে আছে যেখান থেকে এই বিষয়টি অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়। আমরা মনে করি, উনাদের দুজনকে স্থানীয় কোন প্রভাবশালী মানুষের ইন্ধনে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে যাতে জাগ্রত ছাত্রসমাজের কণ্ঠরোধ করা যায়।

সাংবাদিক বন্ধুরা, আপনারা জানেন, আমাদের কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা নতুন কিছু নয়। এর আগেও স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি মিথ্যা "জঙ্গিনাটক" সাজিয়ে আমাদের একজন কর্মীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল, যার ফলে টানা বেশ কয়েক সপ্তাহ হেনস্থা-ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিলো তার পুরো পরিবারকে। অবশেষে নির্দোষ হিসেবে সে ফেরত এসেছিল আমাদের মাঝে। পরাজিত হয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু বারবার ষড়যন্ত্র করেও ধরা খেয়ে যাওয়া সেই দুর্নীতিবাজ নেতার কোন লজ্জা হয় না। তিনি নিজেকে সংবরণ করা দূরে থাক, উল্টো আমাদের কর্মীদের পিছনে লেগে আছেন।

গণহারে মামলা করার এই সুযোগকে তাই তিনি হাতছাড়া করতে চাননি। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তিনি থানা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে আসামি তালিকার প্রথম দশজনে রিয়াজ মাহমুদ ভাই ও রিদুয়ান মোস্তফা ভাইকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। আমরা এমন ন্যাক্কারজনক অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে আপমাদের মাধ্যমে মহেশখালীর সর্বস্তরের মানুষকে উদাত্ত আহ্বান জানাই, এই সুবিধাবাদী, দুর্নীতিবাজ নেতাকে বর্জন করুন, তার মুখোশ খুলে দিন, অবাঞ্চিত ঘোষণা করুন সর্বত্র।

আমি মহেশখালী উপজেলার মান্যবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন জানাই, অবিলম্বে আমাদের এই দুইজন কর্মীসহতদন্ত সাপেক্ষে নিরপরাধ মানুষ কাউকে গায়েবি মামলায় জড়ানো হয়ে থাকলে অবিলম্বে অব্যাহতি দিন। সত্যিকারের অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করুন। আর যিনি আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে দৃঢ় ব্যবস্থা নিন যাতে করে ভবিষ্যতে তিনি এমন ঘৃণাজনক কাজ আর করতে না পারেন।

আমি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করলে, জনবিচ্ছিন্ন জনপ্রতিনিধির কথামতো প্রশাসন চললে, ভবিষ্যতে আমাদের কর্মীদের হয়রানির চেষ্টা হলে, মহেশখালী জাগ্রত ছাত্রসমাজ চুপটি করে বসে থাকবে না। আমি দৃঢ়ভাবে বলছি, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই মামলা থেকে তাঁদের দুজনকে অব্যাহতি না দিলে জাগ্রত ছাত্রসমাজ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। মনে রাখবেন, জুলুম করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে ছাত্রসমাজকে ফাঁসানো যাবে না, দমিয়ে রাখাও যাবে না।

পরিশেষে, আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আজ এখানে সমবেত হওয়ার জন্য। জন্মভূমির মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যেভাবে আপনারা অতীতেও আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেই ধারা যেন অব্যাহত থাকে এই কামনা করে আমাদের সংবাদ সম্মেলনের এখানেই সমাপ্তি ঘোষণা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। জয় হোক মহেশখালীর আপামর মেহনতি মানুষের। পতন হোক দুর্নীতিবাজ, মুখোশধারী স্বার্থপর নেতাদের।

 ভিডিও দেখুন, ক্লিক করুন।