Advertisement


মাতারবাড়িতে ৯০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ এক মাসেও ঠিকেনি। দায় কার?


রকিয়ত উল্লাহ।।
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে আড়াই কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করার পর এক মাসও সড়কটির সুবিধা ভোগ করতে পারেনি মাতারবাড়ির প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সড়ক খ্যাত এ সড়কটির এমন নজুক অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলীর ভূমিকা নিয়ে।

জানাগেছে, গত বছরের জানুয়ারিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মহেশখালী উপজেলা কার্যলয়ে থেকে মাতারবাড়ির নতুনবাজার-সাইরার ডেইল সড়কটি সংস্কার কাজের জন্য ৯০ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আলিফ ইন্টারন্যাশনাল। কাজ পাওয়ার পর একই বছরের মে মাসে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার করা হয়। কিন্তু এবার বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের লবনাক্ত বালু ও কম বিটুমিন দিয়ে পিস ঢালাই দিয়ে এ কাজ শেষ করে বলে অভিযোগ উঠে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংস্কার কাজের এক মাস পেরোতেই সড়কের মাঝখানে ছোট বড় অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়। যার ফলে সংস্কারের আগের চেয়ে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখন সংস্কার কাজের অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করে কাজটি পুনরায় করার জন্য দাবি জানান।

এ সময় মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে সড়কের মধ্যখানে সৃষ্ট ছোটবড় গর্ত পুণঃ সংস্কার করা হবে বলে স্থানীয়দের কথা দেন। অন্যদিকে ঠিকাদার শুভকর বড়ুয়াও সড়কে গর্তের কথা স্বীকার করে তা দ্রুত ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন- প্রতিশ্রুতির বছর পেরোলেও -কেউ কথা রাখেনি। বরং এ গর্তগুলো এখন যেন বড় পুকুরে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিদিন সড়কের মাঝখানের এ গর্তে যাত্রী ও মালবাহী গাড়ী উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এদিকে মাতারবাড়ি, ধলঘাট ও কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ধলঘাটের অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যবহার করে। কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামাল বহন করতে প্রতিদিন শত শত ছোট-বড় মালবাহী গাড়ি যাথায়াত করায় সড়কটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আড়াই কিলোমিটার সড়কের মাতারবাড়ি নতুন বাজার পয়েন্টের শুরুতেই দেখা যায় বড় বড় গর্ত, এছাড়াও পুরানবাজার, বাংলাবাজার, সরদারপাড়া, সাইরারডেইল পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত গর্ত। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দুষছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাতারবাড়িতে এত উন্নয়ন হলেও রাস্তাঘাটের কোন উন্নয়ন হয়নি। এতে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারে না। প্রকল্প পরিদর্শনে সরকার দলীয় ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন  কর্মকর্তারা আসলেও এসব যেন কারও নজরে পড়ে না। তারা দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানান।

মাতারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, গত বছর সড়কটি সংস্কার করলেও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে গর্ত হয়ে গেলে আমি নিজ উদ্যোগে কয়েকবার গর্ত গুলো ভরাট করি। কিন্ত বর্ষাতে আবারও কয়েকটি স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলোও ভরাটের কাজ করতেছি। তারপরও  সড়কটি পুনরায় সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করি শিগগিরই সংস্কার কাজ শুরু হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে জানান, বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের পিচ অনেকটা উঠেগেছে, দ্রুত সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে।