Advertisement


আইসিইউ না পেয়ে চার দিন ছটফট করে মারা গেলেন মহেশখালীর খালেদা


অতিথি প্রতিবেদক।। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ১০টি শয্যার বিপরীতে পাঁচটি শয্যা খালি থাকা সত্ত্বেও আইসিইউ পাননি পোশাককর্মী মহেশখালীর মেয়ে খালেদা (৩৫)। আইসিইউর অভাবে সাধারণ শয্যায় চার দিন ছটফট করে রোববার মারা গেলেন তিনি। খালেদার বাড়ি মহেশখালীর শাপলাপুরে।


‘আমাদের মতো গরিবদের জন্য কেউ নেই। আমার মেয়ে আইসিইউর অভাবে মারা গেছে।’ বিনা চিকিৎসায় মেয়ের এমন মৃত্যুতে অসহায়ের মতো কাঁদতে কাঁদতে এ কথা বলেন খালেদার মা সৈয়দা বেগম।

সৈয়দা বেগম যখন এ প্রতিবেদকের সাথে ফোনে কথা বলছিলেন, তখন অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজছিল। সৈয়দা বলেন, ‘মেয়ের দাফন গ্রামের বাড়িতে তাঁর বাবার কবরের পাশে হবে।’

২১ জুন খালেদাকে ডায়রিয়াজনিত কারণে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) রেফার করেন। চমেকের চিকিৎসকেরা আইসিইউতে নেওয়ার জন্য বলেন। চমেকের আইসিইউ ইউনিট থেকে বলা হয়, শয্যা খালি নেই। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউর জন্য যোগাযোগ করলে সেখান থেকেও শয্যা খালি নেই বলে জানানো হয়।

অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার খালেদার যখন আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন ছিল, তখন চমেকের আইসিইউ ১০টি শয্যার বিপরীতে খালি ছিল পাঁচটি। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও খালি ছিল চারটি আইসিইউ শয্যা।

খালেদার আত্মীয় মো. জালাল জানান, তাঁদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। খালেদা চমেকে ভর্তি হওয়ার পর করোনা পজিটিভ আসে। তখন চিকিৎসকেরা কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন। দাম আসছিল ৯ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা না থাকায় সেই ওষুধও খাওয়ানো হয়নি খালেদাকে।

খালেদার বাড়ি মহেশখালীর শাপলাপুর এলাকায়। তাঁরা ছয় বোন, দুই ভাই। খালেদা নগরীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। অন্য নারী পোশাককর্মীদের সঙ্গে চান্দগাঁও বরিশাল বাজার এলাকায় একটি মেসে থাকতেন। খালেদার বাবা বেঁচে নেই। স্বামীর অত্যাচারে ২০১৩ সালে খালেদার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর চট্টগ্রাম শহরে এসে পোশাক কারখানায় চাকরি করে নিজে চলতেন, মায়েরও খরচ দিতেন। খালেদার সাত বছরের একটি মেয়ে আছে।