Advertisement


ছোট মহেশখালীর চৌকিদারের ঘরে এতো সরকারি ত্রাণের চাল, রহস্য কী?

 


রকিয়ত উল্লাহ ও এম. বশির উল্লাহ▷মহেশখালীতে ইউনিয়ন পরিষদের এক চৌকিদারের অবৈধ আয়েত্বে থাকা অবস্থা থেকে ২৬ বস্তা সরকারি ত্রাণ (বিজিডি)’র চাল উদ্ধার করেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় উপকারভোগির ১০টি ত্রাণের কার্ডও জব্দ করা  হয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন -উপজেলা প্রশাসনের কাছে গোপন সংবাদ ছিলো উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদের আওয়তাধিন ১ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চৌকিদার মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ সরকারি ত্রাণের চাল সরিয়ে রাখা হয়েছে। তথ্যটি জানার পর তালিকাভুক্ত উপকারভোগীদের কাছে বিতরণের জন্য সরকারি ভাবে দেওয়া এ সব চাল উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিক উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশাসন। মঙ্গলবার (৬জুলাই) বিকেলে মহেশখালীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলমগীর এর নেতৃত্ব উপজেলা প্রশাসনের একটি ইউনিট ছোট মহেশখালীর সিপাহীর পাড়া এলাকার ওই ওই চৌকিদারের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তার বাড়ি থেকে ৯ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়। ওই বাড়িতে চৌকিদার মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তারের মেয়ে পারভিন আকতার থাকতো। এ সময় স্থানীয়রা পাশের চৌকিদারের আরও দুইটি আত্মীয়ের বাড়িতে সরকারি চাল মজুদ রয়েছে বলে ম্যাজিস্ট্রেটকে তথ্য দেন। পরে পাশ্ববর্তী সোলতান আহমদের বাড়ি থেকে ১২ বস্তা ও রোকসানা বেগমের বাড়ি থেকে আরও ৫ বস্তা চালসহ মোট ২৬ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা ১০ জন উপকারভোগীর নামে বরাদ্দ করা ত্রাণের কার্ড। এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান -উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান।

এ বিষয়ে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলী জানান-তার ইউনিয়নে মোট ২৩০ জন উপকারভোগী ত্রাণ হিসেবে ভিজিডির চাল পান। একজন উপকারভোগী প্রতিমাসে ৩০ কেজির এক বস্তা চাল গ্রহণ করেন। এবার ৩ মাসের চাল এক সাথে বিতরণ করার ফলে প্রতিজন উপকারভোগী ৩ বস্তা করে চাল গ্রহণ করেন। উপকারভোগীর কার্ড প্রর্দশন ও যথাযথ পদ্ধতি পার না হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গোড়াউন থেকে কেউ চাল বের করতে পারে না। তিনি বলে ওই চৌকিদার হয়তো বিভিন্ন উপকারভোগীর কার্ড নিজের আয়ত্বে এনে অনিয়মের মাধ্যমে সারকারি চাল নিজে মজুদ করেছে। তিনি চৌকিদারের এমন আচরণের বিষয়ে তদন্তপূর্বক শাস্তি দাবি করেন।

নাম ও পদবী প্রকাশে অনিশ্চুক উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে -উপকারভোগীর তালিকা প্রস্তুতের সময় এ চৌকিদার হয়তো বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কার্ড বিক্রি করেছে। ওই উপকারভোগীদের দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চালের বস্তা বের করার পর চৌকিদার টাকার জন্য কার্ড ও চালের বস্তাগুলো নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেয়। ৬ জুলাই (মঙ্গলবার) ওই পরিষদে চাল বিতরণ করা হয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে স্থানীয় অনেকেই জানিয়েছে চৌকিদার আব্দুস সত্তার তার স্ত্রীকে দিয়ে ত্রাণের কার্ড বিক্রি করে আসছিল। উপকাররভোগীদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল উদ্ধার করা হলেও এ চাল মজুদ করা হয় চৌকিদারের বাড়িতে। পরে নিদৃষ্ট চাহিদার টাকা আদায় করেই তাদের কাছে চাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।