পরিত্যক্ত পুকুর থেকে মহেশখালীর কিশোরের লাশ উদ্ধার
বিশেষ সংবাদদাতা।। মহেশখালীতে এক কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহত ওই কিশোরের মরদেহ সকালে চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর এক পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে চকরিয়া থানা পুলিশ। লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে অপমৃত্যু মামলা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান- শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে বদরখালী ৪নম্বর ওয়ার্ডস্থ একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে।
উদ্ধারকৃত মরদেহটি মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার আব্দুল আজিজ এর পুত্রের। কিশোরটির নাম মোহাম্মদ কাইয়ুম (১৪) বলে জানা যায়। কাইয়ুমের এই মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে করছেন তার পরিবার।
কাইয়ুমের পরিবারের দাবি- কাইয়ুম সাঁতার জানে। জন্মের পর থেকে তার মা না থাকায় বৃদ্ধ দাদা-দাদীর কাছে লালিত পালিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, কাইয়ুম মানসিক প্রতিবন্ধী, সে ক্ষিদের তাড়নায় মানুষের কাছে টাকা চাইতো, বিভিন্ন দোকানে খাবার চাইতো আবার বিনানুমতিতে দোকান থেকে খাবার নিয়ে চম্পট দিতো। উদ্দেশ্যহীন ঘুরাফেরা করত বিভিন্ন জায়গায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই পুকুরে যৎসামান্য পানি ছিলো, তাতে ডুবে মৃত্যু হওয়ার সুযোগ ছিলো না। হাত বাঁকানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এই কিশোরের মৃত্যু রহস্যজনক। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি হত্যাকান্ড। বাড়ি থেকে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার দূরে অপর একটি উপজেলায় তার লাশ মিললো। বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে করছেন অনেকই। বদরখালী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামরা রয়েছে ওইসব সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলে কাইয়ুমের মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটন হতে পারে বলে মনে করেন তারা। কোনখান থেকে খাবার বা অন্য কিছু ছিনিয়ে আনা নিয়ে কেউ তাকে মারলে অসাবধানতাবশত তার মৃত্যু হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) চন্দন কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বদরখালীর একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধার পরবর্তী লাশ শনাক্ত হলে নিহত ওই শিশুর পিতা জানান তার সন্তান মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো। তারা থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করবে না বলে জানান। এ অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার পরবর্তী মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ প্রাথমিত তদন্তেও মানসিক প্রতিবন্ধী ছিলো বলে জানতে পেরেছে। এ নিয়ে অপমৃত্যু মামলা হবে বলে জানান ওসি।