Advertisement


মহেশখালী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়, হেড অফিসের নোটিশ


রকিয়ত উল্লাহ।। মহেশখালী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ভুয়া বিল ভাউচার, নিয়ম বহিভূর্ত ভাবে ঋণ, সদস্যদের ঋণ নেওয়ার সময় অফিস খরচ বলে টাকা কেটে নেওয়া, সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজারের সম্মানী থেকে টাকা কর্তন ও ভবন নির্মানে লাখ লাখ টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ ওঠেছে। কক্সবাজারে চাকরিকালে তিনি এ সব দুর্নীতি ও অনিয়ম করেন। এনিয়ে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে তার বিরুদ্ধে একটি কারণদর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করছেন। এদিকে মহেশখালীতেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুনীর্তির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

সূত্রে জানা যায়, তিনি কক্সবাজারের সদরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তা নিয়ে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি টিম অডিট করেন। অডিট রিপোর্টে প্রাথমিক ভাবে বিল ভাউচারে আর্থিক অনিয়মে ২০ হাজার ৭শত ৮০ টাকা, নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২৪ লাখ ৬ শত ৫০ টাকা ঋণ ও বেতন, লাঞ্চ ভাতা উত্তোলন ও ভবন নির্মানের হিসাব বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা মেলে। এর পর তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ আগস্ট পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জুলিয়া খাতুন স্বাক্ষরিত একটি কারণদর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার জেলার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল হক। তিনি জানান, নানা অনিয়মের অভিযোগ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে অডিট করা হয়৷ তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশটি দেওয়া হয়ছে। সরাসরি প্রতিনিধির মাধ্যমে নোটিশটি প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এবং রিসিভ করিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মহেশখালীতে কর্মরত থাকা অবস্থায়ও বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীকে জিতিয়ে দিবেন বলে লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে। পরে তোপেরমুখে এ ঘুষের টাকা ফেরতও দিতে হয় তাকে।

মূলতঃ গত হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে পিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ সময় ভোট কারচুপি করে মেম্বার বিজয়ী করে দিবেন বলে বিভিন্ন প্রার্থী থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। পরে ঘুষ দেওয়া একাধিক প্রার্থী বিজয় না হওয়ার পর তার কাছ থেকে ঘুষের টাকা ফেরত চান। নির্বাচনের পর কয়েক দিন ধরে এই ব্যাংকের অফিসে তুলকালামকাণ্ড ঘটায়। এক পর্যায়ে তাদের টাকা ফেরতও দেন তিনি। ফুটবল প্রতীকের এক প্রার্থীকে সব টাকা যথাযত ভাবে ফেরতও দেননি বলে ওই প্রার্থী সে সময় জানিয়েছিলেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল মান্নান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি সব অভিযোগ অস্বিকার করেন। তিনি বলেন- আমি কোন ধরনের নোটিশ পাইনি। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে নোটিশটি রয়েছে মর্মে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কৌশলে এ প্রতিবেদককে তার অফিসে আসার জন্য অনুরোধ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

উল্লেখ্য গত বছরের ২৯ আগস্ট কক্সবাজার সদর হতে মহেশখালী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে বদলী হয়ে ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এরপরই কয়েকজন মাঠকর্মীর সাথে সিন্ডিকেট গঠন করে সমিতির সদস্যদের ঋন ফাইল অনুমোদন করতে অফিস খরচ বলে টাকা নেওয়াসহ সমিতি থেকে অনৈতিক ভাবে বিভিন্ন অংকের টাকা কেটে নিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সমিতির ভেতরে সদস্যদের মাঝে তার প্রতি ক্ষু্দ্ধতা বিরাজ করছে বলেও জানা গেছে।