Advertisement


দীর্ঘ ৭ বছর পর বহুকাঙ্ক্ষিত মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল হচ্ছে


বিশেষ সংবাদদাতা।।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জেলার সবচেয়ে আলোচিত উপজেলা মহেশখালী। এই উপজেলায় দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প। মহেশখালীতে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রভাব বেড়েছে। এতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বহুগুণে সচল রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সাত বছর পর আজ  ১৬ নভেম্বর বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল। দুপুরের পর বড় মহেশখালী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে হলরুমে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

এতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন প্রধান অতিথি থাকার কথা রয়েছে। বিশেষ অতিথি থাকবেন ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

ধারণা করা হচ্ছে এই সম্মেলন ও কাউন্সিলে অর্ধডজন ব্যক্তি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারেন। তবে শেষ পর্যন্ত কারাই চূড়ান্তরূপে প্রার্থী হচ্ছেন -সে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সম্মেলনের সভাপতি পদে প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হচ্ছেন স্বাধীনতাযুদ্ধে জেলার প্রথম শহীদ মো. শরীফ চেয়ারম্যানের দৌহিত্র, উপজেলা আওয়ামী লীগের আমরন সিনিয়র সহ-সভাপতি ওসমান গণি চেয়ারম্যানের পুত্র, কালারমার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের টানা দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ, বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মাস্টার রুহুল আমিন, বর্তমান সদস্য ও ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, মাতারবাড়ি আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম ছমি উদ্দিন ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব সাজেদুল করিম।

প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি প্রার্থী বর্তমান সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী একজন ঝানু রাজনীতিবিদ। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় রাজনীতির মাঠে রয়েছেন। দীর্ঘকাল ধরে রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিত্বে দায়িত্বে। তবে এখন বয়সের ভারে অনেকটা স্থিমিত হয়ে পড়েছেন। তারপরও দলের তার এখনো গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বহু।
তবে সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিককে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে রয়েছে। তার পিতা প্রয়াত রফিক উল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে জেলা অন্যতম শীর্ষ সংগঠক ছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের। যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান আশেক উল্লাহ রফিক। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে মাঠ কাঁপানো আশেক উল্লাহ রফিকের তরুণ প্রজন্ম ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। তাই আগামী কমিটির সভাপতি হিসেবে তার দিকেই বেশি ঝুঁকছেন নেতাকর্মীরা।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে ইতিমধ্যে বেশ আলোচনায় এসেছেন তারেক বিন ওসমান শরীফ। তিনি একধারে মুক্তিযুদ্ধে জেলার প্রথম শহীদ মোঃ শরীফ চেয়ারম্যানের দৌহিত্র, মহেশখালী ডাকসাইটে ব্যক্তিত্ব, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক প্রয়াত ওসমান গণি চেয়ারম্যানের পুত্র। এছাড়া দাদা-পিতার দিক ছাড়াও অল্প বয়সের মহেশখালীর রাজনীতিতে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে তারেক বিন ওসমান শরীফ। গত দুইবারের ইউপি নির্বাচনে উপজেলা জুড়ে তিনি যে গণজোয়ার তুলেছেন অতীতে এমন নেতা খুব দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে কালারমারছড়ায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের রাজনীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও তার অবদান রয়েছে। এসব বিবেচনায় তারেক শরীফকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে যোগ্য সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে দেখছে নেতাকর্মীরা।
আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাস্টার রুহুল আমিনও একজন পরীক্ষিত নেতা। দীর্ঘকাল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে তার নাম। উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতের শক্ত ভূমিকা নিয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছেন তিনি।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ধলঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসানও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তার পিতা প্রয়াত মোকতার আহামদ দীর্ঘকাল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যানও বহুকাল। সে হিসেবে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে কামরুল হাসানও আলোচনায় রয়েছেন। তাছাড়া শেষমুহুর্তে সবচেয়ে আলোচনায় আছে দলের পরীক্ষিত ব্যক্তিত্ব জিএম ছমি উদ্দিন ও আলহাজ্ব সাজেদুল করিমের নাম।                                                              
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন ও কাউন্সিলকে কেন্দ্র ইতিমধ্যে উপজেলা জুড়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। উপজেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত এখন সম্মেলনের হাওয়া বইছে। নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা চলছে- আগামীর নেতৃত্বে কারা আসছেন। তবে সবার চাওয়া- তৃণমূল ও কর্মীবান্ধব সব দিক থেকে যোগ্য নেতাদের নেতৃত্বে আসুক।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলন ও কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সম্মেলন ও কাউন্সিল বড় ভূমিকা রাখবে।