Advertisement


মহেশখালীতে ছিনতাই হওয়া জেলেট্রলার ও আপহৃত ১৬ জেলে উদ্ধার


মাহবুব রোকন।। সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণ হওয়া ১৬ মাঝি-মাল্লাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মহেশখালীর ৩ জলদস্যুকেও আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে জলদস্যুদের বিভিন্ন অস্ত্র-স্বস্ত্র ও সরঞ্জাম। আজ (বৃহস্পতিবার) রাত ৩টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মহেশখালী থানা পুলিশ মহেশখালীর ঘটিভাঙ্গায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চালায়।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা মহেশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মীর জানান- গত ২৯ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের নাজিরার টেক এলাকা থেকে ১৬ মাঝি-মাল্লাসহ এফবি ভাই ভাই-০৩ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ছিনতাই করে নিয়ে যায় জলদস্যুরা।

কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার জনৈক ছিদ্দিক আহমদের পুত্র শাহাদত হোছেন এর মালিকানাধীন এ ট্রলারটি সমুদ্র থেকে মাছ ধরে উপকূলে ফিরছিল।

এ ঘটনার পর ট্রলার মালিক পরদিন কক্সবাজার সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়রিতে উল্লেখ করা হয়- ট্রলারটি রাতে মাছ ধরে ফেরার সময় ট্রলারের মাঝি রাত ৯টার দিকে তাকে ফোন করে তারা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রের নাজিরারটেক বরাবর পৌঁছেছেন এবং কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের দিকে আসছেন বলে জানান। এর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ট্রলারটি আর উপকূলে ফিরেনি এবং মাঝির সাথেও ফোনে সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি। সে থেকে ট্রলারটি মাঝিমাল্লাসহ নিখোঁজ হয়ে পড়ে।

মহেশখালী থানার পরিদর্শক(তদন্ত) আরও জানান- মহেশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)  ফরাজুল করিম তার পুলিশ দল নিয়ে রাতে ভ্রাম্যমান  দায়িত্বকালে তথ্য পায় যে- ওই ট্রলারটি ছিনতাই ও মাঝি-মাল্লা অপহরণকাজে জড়িত কয়েকজন জলদস্যু মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মঞ্জুর নামের এক জলদস্যুর বাড়িতে অবস্থান করছে। বিষয়টি তিনি তৎক্ষনাৎ মহেশখালী থানায় জানান এবং পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মীর এর নেতৃত্বে এসআই আবুবকর, এসআই ফরাজুল করিমসহ পুলিশ দল ঘটিভাঙ্গার ওই জলদস্যুর বাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় কুতুবজোমের তাজিয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাফর এর পুত্র মোহাম্মদ কাইছার(১৯) ও আব্দুল মালেক এর পুত্র  মোহাম্মদ সোনা মিয়া(১৯)কে ওই বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।

এ সময় তাদের হেফাজতে থাকা ২টি দেশীয় তৈরী একনলা বন্দুক, ১টি দেশীয় তৈরী লাইটার গান (এলজি), ২টি কিরিচ, ১টি দা, ১০টি মোবাইল ফোন, হাতঘড়ি ২টি ও মাছ ধরার ট্রালারের ইঞ্জিনের সেলফ
উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক এই দুই জলদস্যু কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার  শাহাদত হোছেন এর মালিকানাধীন ট্রলারটি মাঝি-মাল্লাসহ ছিনতাই করার দায় স্বীকার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাই করে আনা জেলেট্রলাটি উদ্ধার করা হয়, একই সাথে উদ্ধার করা হয় ট্রলারে থাকা অপহৃত ১৬ জন মাঝি-মাল্লা(জেলে)কেও। অভিযানের এক পর্যায়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া করে ওই এলাকার মকবুল আহমদের পুত্র মোহাম্মদ তারেক(২৬) নামের আরও এক জলদস্যুকে আটক করে পুলিশ।

এ নিয়ে মহেশখালী থানায় পুলিশ বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা ও কক্সবাজার থানায় ট্রলার মালিক বাদি হয়ে ডাকাতির ঘটনায় আলাদা আরও একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া জেলেদের মহেশখালী থানা থেকে কক্সবাজার সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।