Advertisement


সোনাদিয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বার্থে ভালো কিছু করতে চেষ্টা করবে সংসদীয় কমিটি

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি'র নেতৃত্বে সোনাদিয়া পরিদর্শন করেছেন কমিটি



এস. এম. রুবেল, সোনাদিয়া থেকে ফিরে ।।সোনাদিয়া অপার সম্ভাবনার একটি দ্বীপ, জীববৈচিত্রের এই দ্বীপটি মহেশখালীর নয় বরং বাংলাদেশের সম্পদ। এই দ্বীপের পরিবেশ ঠিক রেখে এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুললে দেশের পর্যটন শিল্পে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইতোমধ্যে সোনাদিয়া দ্বীপে ইকোট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ৯,৪৬৭.৩১ একর জমি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বেজার পাশাপাশি স্থানীয়দের যুক্ত করে সোনাদিয়ায় পরিবেশবান্ধব পর্যটন গড়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।

শুক্রবার (৩ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপ পরিদর্শন করে গিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি এসব কথা বলেন। এ সময় কমিটির অন্যান্য সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। সোনাদিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারাও কমিটির কাছে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার জবাবে মি. মোকতাদির  আরও বলেন- “এই দ্বীপে বসবাসরত মানুষদের সঠিক ভাবে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। যতোদিন তাদের স্থানান্তর করা হবে না -ততদিন নাগরিক সুবিধা থেকে তাদের বঞ্চিত করা যাবে না। এছাড়াও উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তুলনা এনে তিনি বলেন ওইসব দেশে স্থানীয়দের অন্যত্র না সরিয়ে ইকোট্যুরিজম করা হয়েছে। চাইলে সোনাদিয়ার মানুষদের পেশা বিবেচনা করে তাদের রেখে বেজা তাদের পরিকল্পনা নবায়ন করতে পারেন। এ সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম কানিজ ফাতেমা আহমেদ, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আলি কদর, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম গোলাম কিবরিয়া, অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়, উপ-সচিব ও কাউন্সিল অফিসার যতন মার্মা, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের উপসচিব এএসএম হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপ-পরিচালক (রিপোর্টিং) মো. সেলিম মৃধা, কমিটি অফিসার মোছাৎ খুরশিদা খাতুন, নওশিন শর্মিলি প্রমি।

সূত্র জানিয়েছে- পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির প্রায়ই সকল সদস্যই উপস্থিত ছিলেন, দলটি নদীপথে সোনাদিয়া প্রবেশ করে দ্বীপটির বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন। সোনাদিয়ায় মধ্যাহ্নভোজ শেষে পরে পশ্চিমের সৈকত হয়ে সমুদ্র পথে কক্সবাজার ফেরেন।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংএ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, “সোনাদিয়া এসে যা দেখলাম এই দ্বীপটি অসাধারণ একটি জায়গা। পরিকল্পনা করে কাজ করলে এখানে হাজারও সম্ভাবনা রয়েছে। মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকায় এরকম দ্বীপগুলোতে পরিবেশবান্ধব পর্যটন গড়ে তোলা হয়েছে। একই ভাবে সোনাদিয়া দ্বীপটিও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র ঠিক রেখে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করা হবে। এবং সেক্ষেত্রে স্থানীয়দের অবকাঠামোগত ও জীবনমান উন্নয়নের বিষয়ে আলাদা পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে।”

এ সময় কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ-সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, “স্থানীয়দের পূর্ণবাসনের যে পরিকল্পনা রয়েছে- সেখানে ঘর, খেলার মাঠ, স্কুল থেকে শুরু করে পর্যটনবান্ধব যে শিল্পগুলো হবে সেখানে কর্মসংস্থানের জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হবে। এক কথায় মানুষের জীবন ধারণের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সব কিছুই এখানে স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাই পূর্ণবাসনের কাজকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তারপর উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে।”
সোনাদিয়ায় এই পরিদর্শন দলে আরও উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান, মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শরীফ বাদশা, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াসিন, মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালারমার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ, কুতুবজোম ইউপি চেয়ারম্যান এড. শেখ কামাল, সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকনসহ কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক  সদস্য, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সংসদীয় কমিটির পরিদর্শন সংক্রান্ত সফরসূচিতে মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির পরিদর্শনের সিডিউল থাকলেও পরে এ সফর বাতিল  করে এই পরিদর্শকদল বিকেলে সোনাদিয়া থেকে কক্সবাজার শহরে ফিরে যান।