Advertisement


মহেশখালীতে ১১ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়াঃ নোটিশ ছাড়াই সংযোগ কাটছে পল্লী বিদ্যুৎ


রকিয়ত উল্লাহ।। কক্সবাজার পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি আওতাধীন মহেশখালী জোনে চলতি অর্থ বছর পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের লক্ষ্যে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়ে মাঠে নেমেছে মহেশখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।


উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে, পাশাপাশি  স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমাম ও সচেতন মহলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সচেতন করা হচ্ছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্দিষ্ট দিনে বুথ খুলে সরাসরি গ্রাহকের কাছ থেকে বিল সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং ও সরাসরি পল্লি বিদ্যুৎ অফিসেও নেওয়া হচ্ছে বিল। এরইমধ্যে গ্রাহকের সাড়া না পেলেই সঙ্গেসঙ্গেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।  

মহেশখালী পল্লি বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়- মহেশখালী উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহকের মধ্যে চলতি মে মাস পর্যন্ত ১০ কোটি ৭৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬০ টাকা গ্রাহকদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল অনাদায়ী রয়েছে। যা আদায় করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কক্সবাজার পল্লি বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের নির্দেশনায় অভিযান চালাচ্ছে মহেশখালী পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি।

এদিকে উপজেলার হোয়ানকের মোহাম্মদ রফিক, আমান উল্লাহ, কাশেমসহ অনেক গ্রাহকই জানান- মিটারের রিডিং না দেখে অনেক সময় ভূতড়ে বিল গ্রাহকদের ধরিয়ে দিচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ এর লোকজন। ফলে অনেক গ্রাহক একসাথে মনগড়া ভাবে প্রস্তুত মোটাদাগের এই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারে না।

তথ্য বলছে- জুন আসলেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে জন্য  নড়েচড়ে বসে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি । এক মাসে এক-দুহাজার টাকা বাকি থাকলেই কোনো নোটিশ ছাড়াই বিদ্যুৎ এর- লাইন কেটে দেন।  নতুনভাবে লাইন চালু করতে গেলেই দালাল ধরতে হয় এবং হয়রানির শিকার হতে হয় গ্রাহকদের। তারা প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল আদায়ে তৎপর থাকলে জুন মাসে এসে অতিরিক্ত চাপ পেতে হতো না বলে মনে করেন অনেক সচেতন গ্রাহক।

কালারমার ছড়ার উত্তর নলবিলা সোলতানিয়া জামে মসজিদের খতিব মৌলানা ইদ্রিস ফারুকী জানান- " জুমার সময় বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের বলা হয়েছে। যাতে সরকার রাজস্ব পায় এবং আমরাও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পাই৷"

মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হায়দার জানান- "ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্‌দোগ। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে আসছে সরকার। বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কেটে দিলে এই সেবা থেকে বঞ্চিত হবে গ্রাহক। তাই যথা সময়ে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভূতড়ে বিল যেন গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া না হয় সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সচেতন হওয়া দরকার।"

এ প্রসঙ্গে মহেশখালী পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. আল আমিন বলেন- মহেশখালীতে প্রায় ১১ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে । সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি। অনতিবিলম্বে গ্রাহকেরা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পেতে গ্রাহকদের সময় মতো বিল পরিশোধ করতে সচেতনা বৃদ্ধি করা হচ্ছে এবং সকলের প্রতি পল্লি বিদ্যুৎ সমিতিকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।