Advertisement


হোয়ানকে ভুয়া দলিল নিয়ে নিরীহ মূল জমি মালিককে হয়রানি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ


বার্তা পরিবেশক।। চলতি মৌসুমে লবণের বাজারমূল্য বৃদ্ধি থাকায় মহেশখালীর বিভিন্ন স্থানে লবণ জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার প্রভাবশালী ও মাস্তান প্রকৃতির লোকজন বিভিন্ন নিরীহ ব্যক্তির জমি দখল করে তাতে চাষ শুরু করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই ভাবে সম্প্রতি হোয়ানকের মৌলানা সফর আলী নামের এক ব্যক্তির জমিতে স্থানীয় একটি চক্র ভুয়া ও অকার্যকর দলিল দেখিয়ে ভোগ দখলে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রতিকার পেতে তিনি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

জানা গেছে- হোয়ানকের হরিয়ারছড়া মৌজায় এম.আর.আর ২৮৮ নং খতিয়ানের মূল মালিক মৌঃ এজাহারুল হকের মোট ৭.৮২ একর জমি ছিল। উক্ত জমি হতে তিনি মকছুদ মিয়া ও ছৈয়দ মিয়াকে বিগত ২৭/১০/৭৮ইং তারিখের ৮০২৭ নং রেজিযুক্ত দলিল মূলে ১.২০ একর, নজির আহমদ পিতা-জালাল আহমদকে বিগত ২৭/১০/৭৬ইং তারিখের ৮০২৮ নং দলিল মূলে ১.২০ একর, এবং মৌঃ সফর আলীকে বিগত ০৬/১০/৭৭ইং তারিখের ৭৭৭৮ নং রেজিঃযুক্ত দলিল মূলে ২,০০ একর, বিগত ২৪/১০/৭৭ইং তারিখের ৮২৯১নং রেজিঃযুক্ত দলিল মূলে ২.২০ একর সহ সর্বমোট ৬.২০ একর জমি বিক্রি করেন।

এ অবস্থায় মৌঃ এজাহারুল হক এর কাছে আর সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে ১.২২ একর। কিন্তু তিনি পরবর্তীতে গত ০৬/৪/৭৮ইং তারিখের ২৬৬৯ রেজিঃযুক্ত দলিল মূলে ছৈয়দ আহমদকে ৩.১৯ একর, বিক্রি করেন, ফলে তিনি অতিরিক্ত ১.৯৭ একর জমি অতিরিক্ত বিক্রি করেন। এছাড়াও তিনি ০৬/০৪/৭৮ইং তারিখের ২৬৭০ নং রেজিঃযুক্ত দলিল মূলে মকছুদ মিয়া ও ছৈয়দ মিয়াকে ৩.১৯ একর, বিক্রি করেন। তিনি মূল জমির চাইতেও ৫.১৬ একর জমি বেশী বিক্রি করার পরও পরবর্তীতে তিনি পুনরায় ৭.৮২ একর জমি গত ২১/০৬/৭৯ইং তারিখ ৪৮৮২ নং রেজিঃযুক্ত দলিল মূলে আজিজুল হককে বিক্রি করেন। ফলে উক্ত মৌঃ এজাহারুল হক সর্বমোট ১২.৯৮ একর ভূমি অতিরিক্ত বিক্রি করেছেন।

এদিকে সফর আলী এ জমি কেনার পর বায়ার এম, আর, আর ২৮৮ নং খতিয়ানের শামিলে নামজারী করে ১৩৭৯ হতে ১৩৯৬ বাংলা পর্যন্ত ১৮ বছর খাজনা আদায় করে। পরবর্তীতে উক্ত সম্পত্তি সরকার ১নং খাস খতিয়ানে অন্তভুক্ত করলে তিনি বাদী হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ২৫৯/৯৬ ইং মামলা দায়ের করে। এ মামলা দোতরফা সূত্রে ২০০১ইং সনে তার পক্ষে ডিক্রী হয়। ঐ ডিক্রীর অনুবলে তার নামে ৪.২০ একর জমি আমার  ৪৮২ নং বি.এস খতিয়ান সৃজন হয়। তৎমতে ১৯৯৭ইং হইতে ১৪২৯ বাংলা পর্যন্ত তিনি সরকারকে ৩৩ বছর রাজস্ব আদায় করেছের। সর্বমোট তিনি ৫১ বছর খাজনা আদায় করেছেন।

এদিকে আজিজুল হক নিঃস্বত্ববান ব্যক্তি হতে কেনা জমির দলিল নিয়ে অহেতুক ভাবে সফর আলীর শান্তিপূর্ন ভোগ দখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে থাকিলে এ বিষয়ে তিনি বাদী হয়ে উপরোক্ত আজিজুল হকের বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে অপর ১৯২/৮৩ স্বত্ব উচ্চারনের একটি মামলা দায়ের করে এবং গত ২২/০৫/১৯৮৩ইং তারিখ বর্ণিত মামলার মূল বিবাদীগণের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। উক্ত মামলায় মূল বিবাদীগণ আদালতে জবাব দাখিল করার পর আদালত সার্বিক বিবেচনায় গত ২৫/০৮/১৯৯৬ইং তারিখ সফর আলীর পক্ষে রায়/ডিক্রী প্রদান করেন। কিন্তু আজিজুল হক সফর আলীকে হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করার মানসে গত ১৪/০৩/২০০৬ইং তারিখে আজিজুল হক গং বাদী হয়ে সফর আলীকে ১৮নং বিবাদী করে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করলে বিগত ২৮/১১/২০১২ইং তারিখ মামলাটি বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দেন। তখন হতে সফর আলী তার জমি শান্তিপূর্ন ভোগ দখল করিতে থাকেন।

এদিকে বর্তমানে মোঃ নোমান গং পিতা-মৃত আজিজুল হক, সাং-পশ্চিম কালাগাজীর পাড়া, হোয়ানক এবং  মোস্তাক মিয়া, পিতা-মোঃ সিরাজ, সাং-পশ্চিম হরিয়ারছড়া, হোয়ানক এর সহায়তায় সফর আলীর শান্তিপূর্ন ভোগ দখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি সহ নানা ভাবে হয়রানী করে আসতেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে তারা স্থানীয় ভাবে বিচার প্রার্থী হইলেও উল্লেখিত ব্যক্তিরা গায়ের জোরে স্থানীয় সালিশ বিচার না মেনে সফর আলীর শান্তিপূর্ন ভোগ দখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে আসছে এবং তাকে ও তার নিয়োজিত চাষাদেরকে মারপিট খুন জখম সহ এ জমি জোর পূর্বক জবর দখল করবে মর্মে হুমকি দিয়ে আসছে।

এদিকে এ নিয়ে মৌলানা সফর আলী পুলিশের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোনো সুরহা পায়নি বলে জানা গেছে। বর্তমানে এই দখল বেদখল নিয়ে এলাকায় বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরণের ঘটনা ঘটে শান্তিভঙ্গের আশংকা রয়েছে। এ অবস্থায় শান্তিশৃঙ্খলা রাক্ষা ও সম্পত্তির ভোগে সাংবিধানিক অধিকার পেতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মৌলানা সফর আলী ও তার পরিবার।