Advertisement


মহেশখালীতে চিংড়ি প্রকল্পে সাধারণ চাষিদের কাছে আতঙ্কের নাম- ইসমাইল বাহিনী


নিজস্ব প্রতিবেদক।। মহেশখালী উপজেলার হোয়ানকে চিংড়ি প্রকল্পের চাষিদের জন্য আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ইসমাইল বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে- চাঁদা না দিলে ২৫-৩০ জনের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে নিরীহ চাষিদের উপর হামলা, লুটপাট ও প্রকল্প দখলের চেষ্টা চালায় বাহিনীটি।

স্থানীয় সূত্র জানায়- হোয়ানক ইউনিয়নের অমাবস্যাখালী এলাকায় চিংড়ি প্রকল্পে সম্প্রতি দুটি আলাদা হামলার ঘটনা ঘটেছে। উভয় ঘটনার নেতৃত্বে ছিল ইসমাইল বাহিনীর প্রধান খ্যত ইসমাইল। অস্ত্রধারী বাহিনী নিয়ে তারা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করে এবং প্রকল্প দখলের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কাকড়া চাষি নুরুল আলম মহেশখালী থানায় দুটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে- গত ১২ জুলাই দিবাগত রাত ৩টার দিকে কেরুনতলী এলাকায় ইসমাইলের নেতৃত্বে রবি আলম, মাহাবুব আলম, খাইরুল আলম, নুর হাসেম ওরফে ডেইক্যা চোরা, সাইফুল ইসলাম, আবুল শামা, রফিক উল্লাহ, জসিম উদ্দিন, সুমন, তারেক (পানিরছড়া), এনামুল করিম, নজির আহমদ, সরওয়ার কামাল, আমির হোসাইন, নুরুল আবছারসহ আরও অনেকে চিংড়ি প্রকল্পে হামলা চালায়। তারা গুলি ছুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করে, প্রকল্পের শ্রমিকদের জিম্মি করে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয় এবং ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

চাষিদের অভিযোগ- ইসমাইল বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে হোয়ানকসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাস, দখল ও চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে। ঈসমাইল অতীতে অস্ত্রসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হাতে আত্মসমর্পণ করে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে তার নিয়ন্ত্রণে ভারী অস্ত্রসহ একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক রয়েছে বলেও অভিযোগে প্রকাশ। বিরোধপূর্ণ পাহাড়ি জমি, লবণ মাঠ ও চিংড়ি ঘের দখল করতে বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন পক্ষের হয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসী পাঠানোর মত অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আরও অভিযোগ রয়েছে- গত ১ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় একই প্রকল্পে দ্বিতীয়বার হামলা চালায় বাহিনীটি। ওই ঘটনায় চিংড়ি প্রকল্পের শ্রমিকদের মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয় এবং ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ঘটনায় থানায় আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান- হোয়ানকের শফিক্যাঘোনা, নজিরঘোনা, নোয়াঘোনা, আমাবস্যাখালী মৌজাসহ অন্তত ১০টি এলাকার চিংড়ি ঘের এখন ইসমাইল বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। কেউ মুখ খুললে তার ওপর নেমে আসে সন্ত্রাসী হামলা। চাষিরা পড়েছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়। এলাকার কিছু বিএনপি নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইসমাইল বাহিনী দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী চাষি নুরুল আলম বলেন- আমরা বৈধভাবে টাকা দিয়ে চিংড়ি প্রকল্প ইজারা নিয়ে চাষ শুরু করেছি। কিন্তু ইসমাইল বাহিনী সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়ে আমাদের মালামাল লুটে নেয়, প্রকল্প দখল করতে চায় এবং বিশাল অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তিনি ও তারা বেশ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে এই বাহিনীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান প্রশাসনের কাছে।

এ বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুরুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- চিংড়ি প্রকল্প ঘিরে একাধিক অভিযোগ থানায় এসেছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেও ইসমাইল এর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি, তার বক্তব্য পাওয়া গেলে যথাগুরুত্বে প্রকাশ করা হবে।