Advertisement


মহেশখালীতে বিএনপির দুই গ্রুফের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, নীরব আওয়ামী লীগ ; সতর্ক পুলিশ


রকিয়ত উল্লাহ।। জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ সকল দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশ কর্তৃক গুলি করে ছাত্রনেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মহেশখালীতে বিএনপির দুই গ্রুফের ঠাণ্ডা বিরোধ চরম আকার রূপ নিয়েছে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দু'বারের সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ গ্রুফ ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক গ্রুফের প্রতিদিন পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচীতে হিমসিম খাচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে এ সবের মাঝেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ।

সূত্রে জানা যায়, ২৯ আগস্ট বিকাল ৪ টায় আলমগীর ফরিদ গ্রুফ বিক্ষোভ মিছিলের জন্য ব্যপক প্রস্তুতি নিচ্ছে অনদিকে আবু বক্কর ছিদ্দিক গ্রুফের আগামী ৩০ আগস্ট বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য ঘোষণা দিয়েছে। এই নিয়ে দুই গ্রুফের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে।

অন্যদিকে প্রতিদিন বিএনপির দুই গ্রুফের মিছিল মিটিং হলেও নীরব রয়েছে আওয়ামী লীগ। সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দিলেও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।

অভিযোগ রয়েছে- এদিকে প্রতিদিন বিভিন্ন কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগ সরকাররে পতনের চেয়ে নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন করুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে চলছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, একজন আরেকজনকে ঠেকাতেই মরিয়া। অশ্লীল বাক‍্য বলতেও দ্বিধা করছেনা বিএনপির প্রতিটি অংশ। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন তৃণমূল বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের অনেকেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নেতাদের এমন আচরণের বিরোধিতা করছেন।

তারা জানান, বিএনপির এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারের পতনের চেয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে বিভাজন সৃষ্টি করে দিচ্ছে নেতারা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজ দলের  সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের পতনের ডাক দিলেও তা মানছে না মহেশখালীতে। ফলে এ বিরোধ চরম আকারে রূপ নিচ্ছে। এ নিয়ে যে কোন মুহূর্তেই দুই গ্রুফের মধ্যেই সংঘর্ষ লেগে যেতে পারেন বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও মহেশখালী-কুতুবদিয়ার দু'বারের এমপি আলমগীর ফরিদের দীর্ঘদিনের বিরোধের জন্য মহেশখালীতে বিএনপির দুইটি গ্রুফ সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সময় এই গ্রুপিং বিলুপ্তি হয়েছে বলে মনে করা হলেও শেষ পর্যন্ত কার্যতঃ গ্রুপিংই থেকে গেছে। দলের এই সময়ে যদি তারা বিরোধ নিরসন না করে -তাহলে মহেশখালীতে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে এবং আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী রূপ নিবে, এরইমধ্যে মাঝখান থেকে সুবিধাজনক অবস্থান নিয়ে ভোটের রাজনীতিতে এগোবে জামায়াত।

উপজেলা বিএনপির নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ও বিএনপির  কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মতে কাজ করে যাচ্ছি৷ আগামী নির্বাচনে যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে কাজ করে যাব।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন- আমরা জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় মহেশখালীতে বিভিন্ন মিছিল মিটিং করে কাজ করে যাচ্ছি। অন্য একটি গ্রুফ ভুয়া কমিটির মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কমিটি অবৈধ বলেও জানান তিনি।  
 
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ জানান- মহেশখালী-কুতুবদিয়া বিএনপির ঘাটি হিসাবে পরিচিত। দলের জন্য অতীতেও সুখে-দুঃখে কাজ করে গেছি, এখনও নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি। আমার নেতৃত্বে ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্য বদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং সামনে সরকার পতনের সকল কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

এদিকে বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি অব্যহত থাকায় এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনকই৷

এ অবস্থায় মহেশখালী থানার ওসি প্রনব চৌধুরী বলেন, বিএনপির দুইটি গ্রুফ একদিন পর পর কর্মসূচী দিচ্ছে।  যাতে কেউ কোন ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে তার জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা অবনতি করার চেষ্টা করলে কঠোর আইনি পদক্ষেপ এর মুখোমুখি করা হবে।