নিজস্ব প্রতিবেদক।। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কুতুবদিয়া উপজেলায় টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চাল, গম ও নগদ অর্থ মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ৫৭ হাজার টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এ বরাদ্দ ব্যবহারের পুরো প্রক্রিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
বরাদ্দের নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়—ইউএনওর স্বাক্ষরে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে মোট ১৪৩টি প্রকল্প অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে তিনি ১৩ শতাংশ হারে কমিশন আদায় করেন। এতে সরকারি বরাদ্দ থেকে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের অর্থ অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রাপ্ত কাগজপত্র অনুযায়ী- প্রথম কিস্তিতে টিআর খাতে ৯৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮০ টাকা, কাবিখা–কাবিটা প্রকল্পে নগদ ১ কোটি ১ লাখ ৩১ হাজার ১১৯ টাকা, ৭২ মেট্রিক টন চাল (বাজারমূল্য ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা), ৭২ মেট্রিক টন গম (বাজারমূল্য ২১ লাখ ১৬ হাজার টাকা), তৃতীয় কিস্তিতে টিআর ৪৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯০ টাকা, চাল ও গম মিলিয়ে আরও ৩৬ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই বরাদ্দ থেকেই মোট ১৪৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে।
বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি প্রকল্পের বিল পাসের আগে ‘ভ্যাট–ট্যাক্স’ নামে ১৩ শতাংশ টাকা দিতে হয় ইউএনওর নির্দেশে। নির্ধারিত কমিশন পরিশোধ না করলে বিল নিষ্পত্তি আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এক প্রকল্প সভাপতি বলেন, “বিল তুলতে গেলে বলা হয়-ভ্যাট–ট্যাক্স রেখে দিতে হবে। না দিলে প্রকল্পের বিল পাস হয় না।”
এ অনিয়ম নিয়ে গত ৭ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের। পরবর্তীতে অধিদপ্তরের উপসচিব কাজী মো. বদরুজ্জামান ১২ অক্টোবর কুতুবদিয়ায় সরেজমিন তদন্তে যান।
তবে তদন্তের এক মাস পার হলেও প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ—তদন্ত প্রতিবেদন “গোপন রাখা হচ্ছে”।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ইউএনও ক্যথোয়াইপ্রু মারমার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
