Advertisement


বাল্য বিবাহের প্রবণতা রোধ করতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার হতে হবে

মহেশখালীতে বাল্য বিবাহ বিরোধী সংলাপে ইউএনও আবুল কালাম

🔴 বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক রোগ, এটি অব্যাহত থাকলে এই ব্যাধিতে এক সময় সমগ্র সমাজ আক্রান্ত হয়ে উঠবে। তাই এই রোগ প্রতিরোধ তথা বাল্য বিবাহ সমূলে বন্ধ করে দিতে আমাদেরকে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। নিজস্ব দায়িত্ববোধ থেকে সোচ্চার হতে হবে। গতকাল উপজেলা শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘বাল্য বিবাহকে ‘না’ বলুন’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম এই অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন মহেশখালীর পটভূমিতে যে হারে বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠানের ঘটনা ঘটে তা বন্ধে আসলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নাই বললে চলে। তাছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে এই সংক্রান্ত যে স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে তা বহুলাংশে কার্যকর নয় উল্লেখ করে এই সংক্রান্তে জনপ্রতিনিধিদের আরও ভাল ভূমিকার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বাল্য বিবাহ রোধে নারীদেরই এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তিনি পৃথিবীর সভ্যতা গড়ার ইতিহাসে নারীর অবদানের কথা স্মরণ করেন। একই সাথে তিনি চাকমা জাতির তুলনামূলক সাক্ষাত উদাহরণ তুলে ধরেন। মানবাধিকার সংস্থা ফ্রেব এর এর আয়োজনে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফরিদুল আলমের সঞ্চালনায় গতকাল মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ বাবুল চন্দ্র বনিক। তিনি বাল্য বিবাহে মহেশখালীর বাস্তবতা তুলে ধরে বলেন গত ১০ মাসে এই উপজেলায় অন্তত: এক হাজারটির মত বাল্য বিবাহ ও নারীর প্রতি সহিংসতা সংক্রান্ত ঘটনা প্রশাসনকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। তাতে ১০০টি জটিল ও ১৫টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত জানেন। দু’দিন আগেও একটি বাল্য বিবাহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ করা হয়েছে তথ্য উপস্থাপন করে তিনি জুমার নামাজের খোতবায় বিষয়টিকে উপস্থাপন করে সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টির তাৎপর্য তুলে ধরার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। সংলাপে আরও আলোচনায় অংশ নেন শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও স্কুলটির পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান সাঈদুল ইসলাম, ইউপি মেম্বার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সা.সম্পাদক জসিম উদ্দিন, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক দিদারুল আলম, স্কুল ছাত্রী আরিফা জান্নাত, তানজিনা আকতার, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের নির্বাহী মো.ইদ্রীস, হাফেজ নুর মোহাম্মদ, ডা. ঊর্মি পাল, কাজী মো. ইব্রাহীম, নারী নেত্রী মশরফা জান্নাত। সংলাপে বাল্য বিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা ও নারী ক্ষমতায়ন নির্ভর ইস্যু সন্নিহিত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। সংলাপে সার্বিক আলোচনায় বাল্য বিবাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান ও কাজীগণ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি উঠে আসে। শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে নিজ নিজ হাত উঁচিয়ে যার যার ভূমিকা থেকে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ব্যাপারে সংলাপ প্যানেলে অংশ নেয়া সকলে শপথগ্রহণ করেন।