Advertisement


বীভৎস কালো রাত



এস,এম ফরিদুল আলম দেওয়ান।

বীভৎস কালো রাত
ভীত সন্ত্রস্ত ঝিঁঝিঁর ডাক
কুয়াশায় ঢাকা সারা গাঁ
তারই মাঝে শত্রুর হিংস্র কামানের গর্জন
যেন হুংকার ছেড়ে বলছে, ওরে ভয় নেই
আমি স্বাধীনতার তোপধ্বনি ।।

গাঁয়ের মেঠো অথবা পিচ ঢালা রাজপথে
শিশির ভেজা সাত সকালে
ছড়ানো ছিটানো তাজা রক্তে
নব অরুণের আলোক রশ্মি গুলো
যেন হেঁসে বলছে,ওরে উত্তরসূরি
আমি স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি ।।

বিল ঝিল হাওড় কিংবা ডোবায়
আমার ভাইয়ের বিবস্ত্র ছিন্ন ভিন্ন লাশ
নির্বোধ শকুনের দল হর্ষোৎফুল্লে
বুকের পাঁজরে বসে টুকিয় টুকিয়ে খাচ্ছে
আর কুহু কুহু ডাকে যেন বলছে
আমি পাচ্ছি স্বাধীনতার অমৃত স্বাদ ।।

বুড়িগঙ্গা শীতলক্ষ্যার বুকে
মস্তক বিহীন ভাসমান গলিত লাশ
নদী তার বুক ফাটা ঢেউয়ের হুংকার ছেড়ে বলছে
যেন লাশ নও তুমি
আমার বুকে স্বাধীনতার
ধবধবে সাদা পাল তোলা তরী ।।

বীভৎস কালো রাত
পল্লী গাঁয়ের জীর্ণ শীর্ণ কুঠিরে
অথবা অন্ধকারে ঢাকা শহরের বস্তির ফাঁক থেকে
ভেসে আসা আমার মায়ের ইজ্জত লুটার
গগন বিদারী আর্তনাদ
আমি তারই মাঝে শুনতে পাই
ইজ্জত গেলে যাক
তবু চাই স্বাধীন বাংলা মায়ের ঠাঁই। ।

কনকনে হাঁড় কাঁপা শীত
ঝুপড়ীর তলে অনাহারী বেদনাতুর
প্রসূতির গুনা প্রহর আর
নবজাতকের মিষ্টি ক্রন্দন
যেন বিদ্রোহের সুরে বলছে
সার্থক এ জনম আমার
আমি এসেছি স্বাধীন বাংলায়। ।

হানাদারের ঘাঁটি অথবা কিলিং স্কোয়াড
মুক্তিকামী কৃষক শ্রমিকের দাঁড় করা লাইন
শত্রুর কামান রাইফেল আর ব্রাশের
বুলেটবিদ্ধ ঝাঁঝরা বুকফাটা চিৎকার
যেন বিজয়ের বজ্রকন্ঠই শ্লোগান
জান গেলে যাক তবু নেই ভয়
জয় বাংলা বাংলার জয় ।

রচনা কাল| ২৫ মার্চ ১৯৯৫