Advertisement


মহেশখালীর কালিগঞ্জ মৌজার জমির মূল্য নির্ধারণে বৈষম্য, সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা ::

আবদুস সালাম কাকলী।। 
মহেশখালীর কালারমার ছড়া ইউনিয়ন থেকে অধিকগ্রহণকৃত ৪টি মৌজার জমির মধ্যে কালীগঞ্জ মৌজার জমির মুল্য নির্ধারণের বৈষম্য করায় মালিকদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এ জমির ন্যায্য মুল্য নির্ধারণের জন্য জমি মালিকরা সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জানা যায়, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী ও সুমিতোমা কর্পোরেশন (জাপান) এর জন্য কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমার ছড়া ইউনিয়নের ঝাপুয়া, কালিগঞ্জ, ইউনুছখালী ও কালারমার ছড়া মৌজা থেকে ২০১৪ সালে ১ হাজার ৫ শত একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব করা হয়। উক্ত প্রস্তাবিত জমিসহ উপজেলার ১৮টি মৌজার উপর ২০১৪ সাল থেকে জমি বেচা বিক্রি এ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। ইউনুছ খালী মৌজা এ বিধি নিষেধের আওতামুক্ত ছিল। কালারমার ছড়ার ৪টি মৌজার জমি অধিগ্রহণের জন্য এল.এ ৩/১৮-১৯ নং মামলা মূলে ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি ৪ ধারা নোটিশ হয় । নোটিশ পাওয়ার পর জমি মালিকগণ গত বছরের ৩১ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবরে সব মৌজার একই রকম মূল্য নির্ধারণের জন্য আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক তা শুনানীর জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে দায়িত্ব দেন। তবে আবেদন শুনানী না করে এল.এ শাখা থেকে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ৭ ধারা নোটিশ জারী করেন। এ নোটিশ ৪টি মৌজারই জমি মালিকগণ গ্রহণ করেন নি। অন্য ৩টি মৌজার চেয়ে কালিগঞ্জ মৌজার জমির মূল্য কম। এতে এ মৌজার জমি মালিকগণ সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাকে সাথে নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী বিষয়টি ভূমি মন্ত্রীর কাছে আবেদন আকারে তুলে ধরেন। ঐদিন বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত রাজস্ব সভায় কালারমারছড়া ইউনিয়ন থেকে অধিগ্রহণকৃত ৪টি মৌজার জমির মূল্য একই রকম করার জন্য ভূমি মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত কালিগঞ্জ মৌজার জমি মালিকগণ বলেন, ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারী মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের ০৪.০০.০০০০.৫১২.০৩২.১৪-১০নং স্মারক মূলে জমির মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি আন্ত: মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য আন্ত: মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে মহেশখালী উপজেলা থেকে অধিগ্রহণ করা সকল মৌজার জমি একই শ্রেণী ও একই মূল্য নির্ধারণ করার জন্য সুপারিশ করা হয়। পরে জমির শ্রেণী একই করলে ও মূল্য নির্ধারণে ছিল ভিন্ন। এ করোনাকালে গত ১৮ মে এল.এ শাখা থেকে এ ৪টি মৌজার মধ্যে ঝাঁপুয়া মৌজার একর প্রতি ৩১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ইউনুছখালী মৌজায় ৩৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, কালারমারছড়া মৌজায় ২৪ লাখ ৬৩ হাজার ৮ শত টাকা ও কালিগঞ্জ মৌজায় ৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে অনুমোদন করেন। মূল্য বৈষম্যের কারণে অন্য ৩ মৌজার ন্যায় মূল্য নির্ধারণের জন্য কালিগঞ্জ মৌজার জমির মালিকদের পক্ষ থেকে মরহুম আবদুল হান্নানের পুত্র নুরে হাবিব তসলিম, মরহুম নুরুল হক চৌধুরীর পুত্র রিয়াজ মোর্শেদ, আবু জাফরের পুত্র মোহাম্মদ ইসহাক ও মরহুম মুরাদ চৌধুরীর পুত্র মো: ইয়াছিন আরফাতের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এহছান এ ছিদ্দিক ভুমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সচিব, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জেলা প্রশাসকসহ ১০ জনকে বিবাদী করে গত ১৬ জুলাই একটি ডিমান্ডিং জাস্টিস্ নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে ইউনুছখালী, ঝাপুয়া, কালারমার ছড়ার ন্যায় কালিগঞ্জ মৌজার মূল্য নির্ধারণ কেন হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত কালিগঞ্জ মৌজার জমির মালিকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য তাদের জমি ছেড়ে দিতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু তাদেরকে ঐ ৩ মৌজার ন্যায় মূল্য নির্ধারণ করার দাবী জানান। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকরা স্থানিয় সাংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সহ ভূমি মন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।