Advertisement


টেকনিক্যাল কলেজ না প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ? ::

প্রথমে বলে রাখা দরকার আমি একাধারে টেকনিক্যাল কলেজের ছাত্র পরে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রও।

প্রাণের মহেশখালীতে টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে সবাই জোরদাবী জানাচ্ছে।সেটার কিছু যৌক্তিক কারণও আছে। ভৌগোলিক কারণ কিংবা সরকারের ইচ্ছায় আমাদের মহেশখালীতে দেশের চলমান উন্নয়নের ইনভেস্টমেন্ট সবচেয়ে বেশি। সেদিকে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।ইনভেস্টমেন্ট করুক প্রতিষ্ঠান হোক সবার মতো আমিও চাই।কিন্তু টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের কিছু জ্ঞানকে সংকীর্ণ করছি না তো? মহেশখালীর সম্ভবনাকে আরো বেশি সংকটে ফেলে দিচ্ছি না তো?কেননা একজন ছাত্র মাধ্যমিক পাশ করে টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে ৪ বছর মেয়াদি কোর্স সম্পন্ন করে। এতে স্বাভাবিক নিয়মে সে দ্বিতীয় শ্রেণীর জবে এপ্লাই করবে। আমার দেখা অভিজ্ঞতা হলো একটি ব্যাচের একটি বিষয়ের ৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শুধুমাত্র(৫-১০ %)শিক্ষার্থী পরে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করতে পারে। যারা কিনা দেশের কিংবা পুরা পৃথিবী কে চ্যালেঞ্জ করতে পারে নিজের জ্ঞান কে নিয়ে ।এখন কথা হলো মহেশখালীর জ্ঞান কে টেকনিক্যাল কলেজ দিয়ে ৩০০০০-৪০০০০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি জীবি গড়ে তোলা? না সম্ভবনাময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে অপার সম্ভাবনা আগামীর মহেশখালী গড়ে তোলা?
আমি এর অর্থ কখনো বলছি না সবাইকে মার্ক জাকারবার্গ, বিল গেটস, নজরুল,রবিন্দ্রনাথ, ইউনুছ হতে হবে। এমনিতেই আমাদের অভিভাবকগণ কম সচেতন, সেখানে আমাদের চিন্তা শক্তিকে যদি আরো বেশি সংর্কীণ করে পেলি তাহলে অবস্থা কি দাঁড়াবে সেটা চিন্তার বিষয়?
এইসব করতে গিয়ে আমাদের যদি ১% শিক্ষার্থী ও বিশ্ব দরবার থেকে নিজেদের কম যোগ্য হিসাবে গড়ে তুলে তখন সে দায়বার কে নিবে?


হ্যাঁ! কথা উঠতে পারে আমাদের এত কর্মহীন লোকদের নিয়ে কি করা যায়?
সেক্ষেত্রে এইসব কোর্সে কর্মহীন লোকদের ভর্তির সুযোগ দিতে হবে। বয়সের বিষয়টা ও বিবেচনায় নিতে হবে।কেননা আমাদের লোকজনের পৈত্রিক কিংবা আদি ব্যবসা ছেড়ে সম্পূর্ণ নতুনভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে।

এইবার আসা যাক! যারা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ঝড়ে পড়বে কিংবা কম মেধাবী তাদেরকে নিয়ে কি করা যেতে পারে?
তাদের জন্য টেকনিক্যাল কলেজের কোর্স সমূহে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে।

এখন আসি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে।

এই মহেশখালীতে যেহেতু সরকারের প্রযুক্তি নির্ভর মেগা প্রকল্প চলমান সেহেতু আমরা একটা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী রাখতে পারি । যদি আরো একটু জুর দিয়ে বলি আমরা কিন্তু এই এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে সরকারের কাছে আধিকার রাখি।
এইখানে অধিকার শব্দটা বলার অর্থ হল সরকারের ইচ্ছায় আমরা এক বাক্যে মহেশখালী বাসী প্রায় ৯হাজার একর জায়গা প্রকল্পের জন্য দিয়ে দিয়েছি।যারা এতটুকু ত্যাগ করতে পারে তারা তো কিছু একটা বলার অধিকার রাখে!
আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করাতে সরকারকে বাধ্য করতে পারি তাহলে সেক্ষেত্রে ৩০-৪০% স্থানীয় কোটার ব্যবস্থা রাখতে হবে। মহেশখালীতে ২০৩০ সালের দিকে শেষ হবে বেশ কিছু মেঘা প্রকল্পের কাজ।
দরুন! যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৫ সালে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করে সেক্ষেত্রে ২০৩০ সালে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ব্যাচ বের হবে যার মধ্যে ৪০০-৪৫০ শিক্ষার্থী (মিনিমাম) মহেশখালীর সন্তান হবে।এইবার একটু চিন্তা করা যাক ২০৩৫ সালের মধ্যে সর্বমোট ৪০০-২২৫০ শিক্ষার্থী (মিনিমাম)বের হবে যারা এই মহেশখালীর সবটুকু চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে। প্রযুক্তিনির্ভর যতো শিল্প-কারখানা হবে সেটার মেধার নেতৃত্ব দিবে মহেশখালী।

আমরা কি মেধার নেতৃত্ব দিবো, না! শ্রমের নেতৃত্ব দিব?সেটাই বিবেচ্য বিষয়!