Advertisement


ছোট মহেশখালীর চেয়ারম্যান আলীর বিরুদ্ধে বৃদ্ধকে নির্যাতনের অভিযোগ

উপজেলা সদরে বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষের একাংশ।
আ ন ম হাসান, মহেশখালীর সব খবর ।। 
ছোট মহেশখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলীর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে হাত পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনার প্রতিবাদে ২৩ জুলাই দুপুরে এ ইউপি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। পরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের শান্ত করেন ৷ তবে চেয়ারম্যার আলী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায় -২২ জুলাই চেয়ারম্যান আলীর বরাত দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের কার্ড বিতরণ করা হয় ৷ কিন্তু ওই ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম এলাকায় কেউ ত্রাণের কার্ড পায়নি বলে অভিযোগ তুলে হতাশা প্রকাশ করতে থাকেন। পরে এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে ওই এলাকার হারুন ইউনিয়ন পরিষদে যান ৷ এ সময় চেয়ারম্যান হারুনকে তার কাছে কোন কার্ড নেই বলে জবাব দেন ৷ তিনি উক্ত এলাকার জন্যে সকল কার্ড আদর্শ গ্রাম ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছৈয়দকে দেওয়া হয়েছে বলে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন ৷ পরে হারুন -ছৈয়দের সাথে যোগাযোগ করলে ছৈয়দ বলেন, আমাকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের জন্যে ৫০টি কার্ড দেওয়া হয় ৷ যা আমি সেক্রেটারি আব্দু সমদকে ২২টি দিয়ে ২৮টি নিজের কাছে রেখেছি ৷ এক পর্যায়ে সৈয়দ ও হারুন মিলে চেয়ারম্যানের সাথে কার্ডের বিষয়ে কথা বলতে পরিষদে আসলে চেয়ারম্যান তাদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ৷ অভিযোগ রয়েছে এ সময় চেয়ারম্যান লাঠি নিয়ে ছৈয়দকে মারধর করে পরিষদ হতে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন ৷ এমন অপমানে ছৈয়দ পরিষদ হতে বের হয়ে স্থানীয় লম্বাঘোনা বাজারে বিভিন্ন মানুষের কাছে দুঃখ করে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন ৷

ছৈয়দের পারিবারিক সূত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে -একই দিন সন্ধ্যায় ছৈয়দের উপর ফের হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে একটি খবর ছড়িয়ে পড়লে তারা ঘরোয়া এক বৈঠক ডেকে বিষয়টি আত্মীয়-স্বজনকে অবহিত করেন।

এদিকে ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ছৈয়দ লম্বাঘোনা বাজারে আসলে, কিছু বুঝে উঠার আগেই তার উপর সংঘবদ্ধ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান -স্থানীয় রমজান, চিহ্নিত সন্ত্রাসী জাগির, ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, জাহাঙ্গীর, যুবদল নেতা নুরুল হক মিলে ছৈয়দকে মারতে মারতে একটি গাড়িতে তুলে নেয় ৷ পরে নাজুক অবস্থা সৃষ্টি করে চেয়ারম্যানসহ চেয়ারম্যানের চেয়ারম্যানের বাড়ির দিকে নিয়ে যায়  এবং হাত পা বেঁধে তাকে বৃষ্টির মধ্যে চেয়ারম্যানের চাচা রমজানের বাড়ির উঠোনে ফেলে রাখে ৷

এদিকে এ খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র এক ধরণের উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে স্থানীয় কয়েকজন নেতাসহ এলাকার গণ্য লোকজন চেয়ারম্যানের চাচার বাড়িতে গিয়ে উভয় পক্ষ শান্ত করার চেষ্টা করে এবং বিষয়টি সামাজিক বৈঠকের মাধ্যমে সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

এরই মধ্যে একদল উত্তেজিত নারী-পুরুষ উপজেলা সদরে এসে বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় তারা প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলতে দেখাগেছে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলির মুঠোফোনে মহেশখালীর সব খবরকে বলেন -অপহরণ ও মারধরের যে অভিযোগ করা হচ্ছে এটি মোটেও সত্য নয়, কোনো একটি পক্ষের ইন্দনে তারা না বুঝে আমার বিরুদ্ধে এমন মানহানিকর মিথ্যা প্রচারণা শুরু করেছে। তিনি ঘটনার দীর্ঘ বিবরণ দিয়ে বলেন নিয়মমত তাদেরকে ত্রাণের কার্ড দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বিষয়টিকে সম্পূর্ণ উল্টো ভাবে মোড ঘুরিয়ে মূলতঃ তার মানহানি করা হয়েছে। এসব লোকজন হয়তো কারও ইন্দনে বার ইউনিয়ন পরিষদে এসে চরম দুর্ব্যবহার করে। তার পরেও তিনি তার এলাকার লোক হওয়ার তারা না বুঝে এসব করছে মনে করে কোন আইনি ব্যবস্থা নেননি বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম মহেশখালীর সব খবরকে জানান -গতকাল উপজেলায় কিছু লোকজন আসার পর তাদেরকে সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয় নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে কেউ আসেনি। তিনি বলেন এলাকায় প্রচুর সরকারি ত্রাণ রয়েছে। ত্রাণ নিয়ে এমন ঘটনার সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি বোধগম্য নয়। তিনি চাহিদার অনুযায়ি সবাইকে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান। এবং সবাইকে এসব বিষয়ে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।