Advertisement


মহেশখালী-কুতুবদিয়া-টেকনাফে ইউপি নির্বাচন বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে বিএনপি


প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ নিয়ে বিপাকে রয়েছে বিএনপি। দল থেকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেও তাদের নিবৃত করা যাচ্ছে না। জেলার ৯ টি ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থীদের পাশাপাশি ১০ জন বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। সেই হিসেবে ওইসব ইউনিয়নে বিএনপি’র একক প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মোকাবেলা করার পাশাপাশি নিজের দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেও লড়াই করবেন। এর প্রভাব পড়তে পারে বিএনপির ভোট ব্যাংকেও। বিএনপির জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অবশ্য এই আশংকাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী দাবী করেছেন, বিএনপিতে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করছেনÑএমন কোন প্রার্থীকে তিনি চেনেন না। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আকতার কামাল চৌধুরীকে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির এনায়েত উল্লাহ বাবুল। এনায়েত উল্লাহ বাবুল সাবেক সাংসদ আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের আপন ভাইপো। ছোট মহেশখালী ইউনিয়নে বিএনপির টিকিট পেয়েছেন মো. নুরুল হুদা। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা। ধলঘাটা ইউনিয়নে  বিএনপির একক প্রার্থী সরওয়ার আলম শাহীন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য নুরুল আলম। হোয়ানক ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে মো. এনামুল করিমকে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ। টেকনাফ সদর ইউনিয়নে বিএনপি’র একক প্রার্থী ছিলেন জিয়াউর রহমান জিহাদ। যাছাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়ন প্রাথমিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন টেকনাফ সদরে ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোক্তার আহমদ। তার মনোনয়নও বাতিল করা হয়েছে মঙ্গলবার। সাবরাং ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী ঘোষনা করা হয়েছে মো. সুলতান আহমদকে। সেখানে প্রার্থী হয়েছেন শাহপরীরদ্বীপ বিএনপি’র সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাঈল। কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বিএনপির টিকিট পেয়েছেন ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ ও তার ভাই তারেক মো. নওশাদ। কৈয়ারবিল ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী জালাল আহমদ। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আবু মুছা কুতুবী। লেমশীখালী ইউনিয়নে বিএনপি’র একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয় মো. আকতার হোসাইনকে। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপি সদস্য মোহাম্মদ আজম। বিভিন্ন ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি ইউনিয়নে বিএনপি’র একক প্রার্থী বাছাই করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমাদের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। যাদের বিদ্রোহী বলা হচ্ছে, তাদের আমরা চিনিনা।’ বিএনপি’র উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কিছু পদবীধারী নেতাকর্মীর মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘কেউ বিদ্রোহ করে নির্বাচন করলে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে কক্সবাজার জেলার ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহন হবে আগামী ২২ মার্চ। এর মধ্যে কুতুবদিয়া উপজেলার ৬ টি, মহেশখালী উপজেলার ৭টি এবং টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ঘোষিত তপসীল অনুসারে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিলো ২২ ফেব্রুয়ারী। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়েছে ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২ মার্চ। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৩ মার্চ।