Advertisement


ইউনুছখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের আলোকিত ছাত্রী হোসনে আরা







কালারমার ছড়া থেকে🔴 সাফল্যর ধারাবাহিতায় এগিয়ে যাওয়া মহেশখালীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনুছখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের (কালারমার ছড়া) অনেক কৃতি শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবন শেষ করে বর্তমানে দেশে- বিদেশে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। নিজের শিক্ষা ও মেধার যোগ্যতাবলে স্ব স্ব অবস্থানে ভূমিকা রেখে চলেছেন তাঁরা। কালারমার ছড়ারই কন্যা হোসনে আরা তেমন একজন মেধাবী ছাত্রী। তিনি এই অঞ্চলের আলোকিত বিদ্যায়তন ইউনুছখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে ২০১০ সালের এসএসসিতে এ প্লাস অর্জনকারী একজন কৃতি শিক্ষার্থী। স্কুলের শিক্ষা জীবনে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন বলে তার শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

জানাগেছে, সদ্য প্রকাশিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ফলাফলে কক্সবাজার সরকারী কলেজের ২০১২-২০১৩ সেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী হোসনে আরা বেগম সিজিপিএ ৩.৯৭ পেয়ে গণিত বিভাগ থেকে সারাদেশে প্রথম হয়েছে। হোসনে আরা মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালীর বাসিন্দা শাহ আলমের কনিষ্ঠ কন্যা। তিনি ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় কালামার ছড়ার ইউনুছখালী নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ অর্জন করেন। ২০১২ সালে একই বিভাগে কক্সবাজার সরকারী কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেন।

জানাগেছে ধারাবাহিক ভাবে এতো সাফল্য মণ্ডিত ফলাফল করার পরেও পরিবারের অসম্মতির কারণে কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। একসময় পড়াশোনা নিয়ে ভবিষ্যৎ কি হবে সে চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন হোসনে আরা। তারপরও থেমে থাকা নয়, নিজের এক ধরণের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কক্সবাজার সরকারী কলেজের গণিত বিভাগে ভর্তি হন। এখন থেকেই শুরু হলো তার আরেক সাফল্য যাত্রা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েও সারা দেশে সাড়া জাগানো ফল অর্জন করলেন হোসনে আরা বেগম।

এমন নজির সৃষ্টকারী ফলাফল অর্জনে তার অনুভূতি কি জানতে চাইলে হোসনে আরা গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাকে কেউ পড়ার জন্য উৎসাহ যোগাতো না। মাধ্যমিক জীবনে আমার শিক্ষকরাই ছিলেন আমার মূল অনুপ্রেরণা। ছোটবেলা থেকেই আমি নিজ উদ্যোগে ও অনেকটা নিজের আগ্রহ থেকে পড়ালেখা করে আসছি। কলেজ জীবন শেষ করার পর আমার বন্ধু-বান্ধবরা সবাই যখন বিভিন্ন মেডিকেল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তখন নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে যেতাম। তারপরও কিন্তু আমার মধ্যে একটা প্রচণ্ড জেদ কাজ করে। সবাই পারলে আমি পারবো না কেন? আমাকে পারতে হবে।  এমন প্রত্যয় থেকে এগিয়ে যাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি বলে আমি থেমে যাবো না। সব বাধা পেরিয়ে সামনে এগিয়ে যাবো। কর্মক্ষেত্রে সবার সাথে আবার একত্রিত হবো। এমন প্রতিজ্ঞা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে থাকি। তবে তার সফলতাও আমি পেয়েছি। এই কৃতিত্বের জন্য আমি আমার স্কুল শিক্ষক, শিক্ষিকা পরিবার পরিজন, আমার কলেজের শিক্ষকগণ,আমার বন্ধু বান্ধব যারা আমার পাশে ছিল সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এই সফলতা আমার নয় তাদের,যারা আমাকে মাধ্যমিক জীবনে থেকে উৎসাহ দিয়ে এতটুকু আসতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে হোসনে আরা বলেন, সর্বক্ষেত্রে ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই এবং ভবিষ্যতে একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। তিনি এই ধারাবাহিতা বজায় রাখতে সকলে দোয়া প্রার্থনা করেন।

উল্লেখ্য, হোসনে আরা তার অনার্স প্রথম বর্ষে সিজিপিএ ৩.৮২ এবং অনার্স ২য় বর্ষে ৩.৯৪ পেয়ে সারাদেশে ২য় হয়েছিলেন। তার এই ধারাবাহিক ফলাফলে গর্বিত তার শিক্ষক,পরিবার,বন্ধু-বান্ধব প্রতিবেশী সকলে।