Advertisement


একজন খোদেজার মৃত্যু: আমাদের অপপ্রচার ও নৈরাজ্য

 মোঃহেলাল উদ্দিন হেলাল

একজন নাগরিকের স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারা সাংবিধানিক অধিকার। রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ছাড়া কাউকে চলাচলে বাঁধা দেয়া যাবে না। তার উপর আদালতের রায়।সংবিধান ও আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে শ্রমিক ফেডারেশন যা করছে তা নৈরাজ্য তো বটেই,অপরদিকে সংবিধান ও আদালত অবমাননা।

ট্রাক চালককে আদালত ফাঁসির রায় দিয়েছেন, তার প্রতিবাদে ধর্মঘট। এই ট্রাক চালক রাস্তায় ট্রাক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করেনি। হত্যা করেছে, অন্যের পারিবারিক রাস্তা দিয়ে মাটি ভর্তি ট্রাক চালাতে নিষেধ করা হয়েছিল বলে। ঘটনাটি ঘটেছিল সাভারের ঝাউচরে। তাদের রাস্তা দিয়ে মাটির ট্রাক নিয়ে যাওয়া যাবে না, একথা বলে ট্রাকের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন খোদেজা বেগম। না সরলে চাপা দিয়ে মেরে ফেলবেন, চালকের এই হুমকিতেও সরেননি খোদেজা বেগম। ট্রাক চালক তারপর চাপা দিয়ে হত্যা করে খোদেজা বেগমকে। ২০০৩ সালের ২০ জুন ঘটানো হত্যাকাণ্ডের রায় হয় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।

বিচার বিভাগ বা আদালত নয়, কোন আইনে, কোন ধারায় বিচার হবে, তা বলে দিচ্ছেন শ্রমিক সংগঠন।তাদের দাবী, মানুষ হত্যা করা যাবে, বিচার বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া যাবে না, এই দাবিতে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ধর্মঘট বৈধ। অনেকেই বলেছেন, তাদের আন্দোলন করার অধিকার আছে।

খুনের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের সেন্টিমেন্ট গ্রো করার অপপ্রয়াস চালানো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।

মামলা দায়ের,তদন্ত,অভিযোগপত্র দাখিল,সাক্ষ্য গ্রহণ,আসামী শনাক্ত,যুক্তি তর্ক,আসামী পক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, অবশেষে রায়।দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষেই একটি মামলার রায় হয়।এ প্রক্রিয়ার যে কোন ধাপে যে কোন পক্ষ অসন্তুষ্ট হলে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে।সে কাজটি না করে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি,মানুষের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে।এটাই বিধান।রাস্তায় আন্দোলন করে ঘোষিত সাজা কমানো বা বাতিল করার কোন সুযোগ রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে নাই।সবাইকে আইন মানতে হবে।মিথ্যা প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি কার স্বার্থে?দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যু আর ইচ্ছাকৃত খুন অনেক তফাৎ।

লেখক: মোঃহেলাল উদ্দিন হেলাল,  মহেশখালীর সন্তান, পুলিশ কর্মকর্তা, ভূজপুর থানা, চট্টগ্রাম।