তামান্না মেহেজাবীন নীলা 🌕
বড় মহেশখালীর নিবৃত গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাণবন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ। এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রান্তের এই উপজেলার অনেক অসচ্ছল অভিভাবক, অনেক শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণ হতে শুরু করেছে। বাস্তবিকতার দিক থেকে মহেশখালীর অনেকগুলো পরিবারের বহু এলাকার মেয়েরা এই কলেজে পড়তে আসে। মহেশখালীর মত একটি দ্বীপ উপজেলায় সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে মেয়েদের জন্য উচ্চ শিক্ষা একটি সহজ ব্যাপার ছিলো না। মাধ্যমিক শিক্ষার পর মেয়েরা প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া থেকে ছিটকে পেড়ে। এলাকার ছাত্রীদের অনেক বাবা-মা সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে প্রায় কনজারভেটিভ। তারা কোনো ভাবে চায় না তাদের নারী সন্তানটি শহরে গিয়ে বা ব্যস্ততম উপজেলা সদরে গিয়ে পড়ালেখা করুক। ফলে বন্ধ হয়ে যায় পড়ালেখা। এমতাবস্থায় তাদের এই একমাত্র ভরসার আশ্রয়স্থল হলো এই মহিলা কলেজটি। এই অঞ্চলে নারী শিক্ষার জন্য একটি মহিলা কলেজ না থাকলে কালারমার ছাড়া, শাপলাপুর, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটার মতো দূর এলাকার অনেক মেয়ের হয়ত পড়াশোনা হয়ত বন্ধ হয়ে যেত। অথচ তার হিসাব কেউ রাখে না অথবা খোঁজখবরটুকুও নেয় না।
শিক্ষাজীবনে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি -এই কলেজের টিচারগুলো ছাত্রীদের বাবা আর মায়ের মতো ভালবাসা দেন, যত্ন করে রত্ন করে গড়ে তোলেন। যার ফলে এই মহিলা কলেজ থেকে পাশ করা অনেক মেধাবী মেয়ে আজ দেশের বড় বড় পাবলিক ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত। একটু ভেবে দেখুন যে, হয়তঃ কলেজটি না থাকলে যেসব মেয়েগুলোর পড়াশোনাই হত না, তারাই আজ ভাল ভাল সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের কলেজ হলেও স্যারদের মধ্যে দায়িত্বশীলতার কোন কমতি থাকে না। সেই সকাল থেকে ইউনুছ স্যার, জাফর স্যার কক্সবাজার হতে এসে ক্লাস করান। কলেজটির সমস্ত শিক্ষকই ছাত্রীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণার ঠিকানা।
বড় মহেশখালীতে বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের মূল শিক্ষা ভবন |
লেখকঃ
কলেজটির বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী
২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ। কালারমার ছাড়া।